কলকাতার অলিগলিতে প্রতারণা চক্র ফেঁদে বসেছিল জামতাড়া গ্যাং। রীতিমতো ঘাঁটি গেড়ে প্রতারণার জাল বিছিয়েছিল প্রতারকেরা। বুধবার রাত থেকেই শহরজুড়ে অভিযান চালিয়ে ১৬ জনকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে ব্যাঙ্ক প্রতারণা বিরোধী শাখার আধিকারিকরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের অধিকাংশের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া, গিরিডি ও ধানবাদ এলাকায়। তল্লাশি চালিয়ে অভিযুক্তদের কাছ থেকে শতাধিক জাল এটিএম কার্ড, ২৩টি মোবাইল ও ১২টি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে এই সব কাজ করত তারা। পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতা শহরের বহু মানুষের বাস। তাই এখানে সাধারণ মানুষকে নিশানা করতে সুবিধা হত প্রতারকদের। তাই তারা এই শহরকে বেছে নিয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৩ অগস্ট দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা সত্তর বছর বয়সী চণ্ডীদাস মল্লিকের কাছে একটি ফোন আসে। সেখানে তাঁকে বলা হয় যে, অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য না দিলে, এটিএম কার্ড ব্লক হয়ে যাবে। যে ব্যক্তি তাঁকে ফোন করেছিলেন তিনি নিজেকে ব্যাঙ্ক কর্মী বলেই পরিচয় দিয়েছিলেন। সেই অপরিচিত ব্যক্তিকে চণ্ডীদাসবাবু তথ্য দিতেই তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৫১ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়। তার কিছুক্ষণ বাদেই আবারও ফোন আসে। তখন তাঁকে বলা হয় যে, ভুল করে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। সেই টাকা ফেরত পেতে বাড়তি তথ্য লাগবে। বাধ্য হয়ে তিনি সেই তথ্যও তাদের হাতে তুলে দেন। তারপরই ফের তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে আরও ৭৪ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়। এরপরেই ব্যাঙ্ক ও লালবাজারের সাইবার ক্রাইম শাখায় অভিযোগ দায়ের করেন প্রতারিত প্রৌঢ়।
তদন্তে নেমে প্রতারণার ধরন দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। পুলিশ জানতে পারে, যারা এই কাজ করেছে তারা জামতাড়া গ্যাংয়েরই সদস্য। এরপরেই এদিন সকাল থেকে ধরপাকড় অভিযান শুরু করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ধৃত ১৬ জনকে বাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। এই প্রতারণার শিকড় আরও কতটা গভীরে ছড়িয়েছে, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তা জানতে চাইছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।