সরকারি ভাতা নিয়ে বেসরকারি জায়গায় চিকিৎসা বা প্রাইভেট প্র্যাকটিস করার অভিযোগ উঠেছে ১৯ জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। এই চিকিৎসকরা যে বেসরকারি জায়গায় চিকিৎসা করছেন তার প্রমাণ মিলেছে স্বাস্থ্যসাথীর নথি থেকে। কারণ বেশ কয়েকজনের অস্ত্রোপচার হয়েছে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে। তাতে এই চিকিৎসকদের নাম রয়েছে। এই অবস্থায় এই ১৯ জন চিকিৎসককে তলব করেছে স্বাস্থ্য দফতর। তাদের বিশেষ কমিটির সামনে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত চিকিৎসকদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য দফতর।
আরও পড়ুন: ইস্তফা দেওয়া ডাক্তাররা প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছে কেন, খোঁচা দেবাংশুর
প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত চিকিৎসকদের অনেকেই দাবি করেছেন তারা সরকারি ভাতা নেন না । সে বিষয়টি তারা সরকারকে জানিয়েছেন। শুক্রবার এই নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তার মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরে ৯ জন চিকিৎসক রয়েছেন। তিন জন রয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে এবং বাকি চিকিৎসকরা রয়েছেন হাওড়া, হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পুরুলিয়া, নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদ থেকে। এইসব চিকিৎসকদের আগামী ১২ ও ২০ ফেব্রুয়ারি হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ কমিটির কাছে তাদের প্রয়োজনীয় নথি নিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই সমস্ত চিকিৎসকরা সরকারি ভাতা নিয়ে বেসরকারি জায়গায় গিয়ে চিকিৎসা করছেন। স্বাস্থ্য সাথীর নথিতে তাদের নাম দেখে সহজে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর থেকে যে ৭ জন চিকিৎসকের নাম রয়েছে তারা তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজের। তাঁরা দাবি করেছেন, তাঁরা সরকারি ভাতা নেন না। সেই দাবিকে স্বীকৃতি জানিয়েছে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ শর্মিলা মল্লিক জানিয়েছেন, ওই চিকিৎসকরা সরকারি ভাতা নেন না। সরকারি হাসপাতালে তাদের বিরুদ্ধে গাফিলতির কোনও অভিযোগ নেই।
এছাড়াও চিকিৎসকদের তালিকায় রয়েছেন, নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতাল, জঙ্গিপুর মহকুমার হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তারাও একই দাবি করেছেন। সে ক্ষেত্রে হাসপাতাল সুপাররা জানিয়েছেন, তারা কেউ সরকারি ভাতা নেন না। তবে তাদের সেই বক্তব্য মানতে নারাজ স্বাস্থ্য ভবন। সেই কারণে তাদের নথি জমা দিয়ে তা প্রমাণ করতে বলেছে স্বাস্থ্য দফতর।
অন্যদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুরের ৩ অভিযুক্ত চিকিৎসক হাসপাতালে নিয়মিত নন বলে জানা গিয়েছে। এ বিষয়ে জেলার এক স্বাস্থ্য অধিকারিক জানিয়েছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাছাড়া পুরুলিয়ার এক চিকিৎসক ৩ বছর আগে ইস্তফাপত্র দিয়ে আনঅথরাইজ়ড লিভে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এখন কমিটি খতিয়ে দেখছি যে এই সমস্ত চিকিৎসকরা হাসপাতালে কাজের সময় অনুপস্থিত থেকে বেসরকারি হাসপাতালে প্র্যাকটিস করছেন কিনা।