বৈশাখের গরমে কালবৈশাখীর অপেক্ষায় কলকাতা ও লাগোয়া জেলাগুলির বাসিন্দারা। গোটা রাজ্যে ছোট – বড় কালবৈশাখী দেখা গিয়েছে গত কয়েক সপ্তাহে। কিন্তু কলকাতা এখনো অপেক্ষায়। যদিও অনেক বছর চৈত্র এমনকী ফাল্গুনের শেষ থেকেই কলকাতায় হানা দেয় কালবৈশাখী। কেন বৈশাখেও দেখা নেই কালবৈশাখীর কী বলছেন আবহাওয়াবিজ্ঞানীরা।
প্রচণ্ড গরমে কলকাতা ও শহরতলির মানুষের মুখে এখন একটাই প্রশ্ন, কবে আসবে কালবৈশাখী? রাজ্যের অন্যান্য জেলায় ঝড়-বৃষ্টিতে লন্ডভণ্ড কাণ্ড হলেও কলকাতায় তার দেখা নেই কেন? আবহাওয়াবিজ্ঞানী রবীন্দ্র গোয়েঙ্কা এর পিছনে মূলত চারটি কারণকে দায়ী করেছেন। যার মধ্যে একটির জন্য দায়ী আমরাই।
১. দূষণ – বড় শহরগুলিরতে বায়ুদূষণের জেরে আবহমণ্ডলে একটি দূষিত বায়ুর অর্ধগোলক তৈরি হয়। যার জেরে ওই এলাকায় আবহাওয়ার চরিত্র বদলে যায়। বায়ুদূষণের জেরে পশ্চিমের জেলাগুলিতে তৈরি কালবৈশাখী কলকাতা ও লাগোয়া জেলাগুলিতে প্রবেশে বাধা পাচ্ছে।
২. বাতাসের গতি - বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরের আর্দ্র বাতাস শক্তি সঞ্চয় করে ওপরের শীতল স্তরে গিয়ে কালবৈশাখীর মেঘ তৈরি করে। কিন্তু বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তরে বাতাস প্রবল গতিতে বইছে। যার ফলে মেঘ তৈরি হলেও দ্রুত তা ফের বিলীন হয়ে যাচ্ছে আবহমণ্ডলে।
৩. শুষ্ক বাতাস – বর্তমানে পশ্চিম ও মধ্যভারত থেকে আসা শুষ্ক বাতাস বইছে বায়ুমণ্ডলের নিম্ন স্তরে। এর ফলে ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি থাকা আর্দ্র বাতাস একটু ওপরে উঠলেই তাতে থাকা জলীয় বাস্প ছিনতাই করে নিচ্ছে শুষ্ক বাতাস। এর জেরে শক্তিশালী মেঘপুঞ্জ তৈরি হচ্ছে না। কালবৈশাখী হলেও তা হচ্ছে স্থানীয়ভাবে।
৪. টার্ফ লাইন – বর্তমানে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর থেকে আসা আর্দ্র বাতাস ও পশ্চিম থেকে আসা শুষ্ক বাতাসের সম্মিলন ক্ষেত্রটি বিস্তৃত রয়েছে রাজ্যের পশ্চিমের জেলাগুলির ওপর দিয়ে। ফলে সেখানে কয়েকটি কালবৈশাখী দেখা গেলেও অন্যান্য বছরের মতো সেই ঝড় দীর্ঘ পথ পেরিয়ে রাজ্যের পূর্ব দিকের জেলাগুলিতে পৌঁছতে পারছে না।
পূর্বাভাস অনুসারে, বৃহস্পতিবার বা শুক্রবার কলকাতা লাগোয়া জেলাগুলির ওপর দিয়ে কালবৈশাখী বয়ে যেতে পারে। তবে পুরোটাই নির্ভর করছে আবহমণ্ডলের পরিস্থিতি বদল হয় কি না তার ওপর।