বহুতলের সানসেটে হাত ধারাধরি করে দাঁড়িয়ে পাঁচ তরুণী। উপর থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিচ্ছেন পথচারীদের! চিৎকার করে বলছেন, ‘তাঁদের বকেয়া টাকা দেওয়া হচ্ছে না।’ রবিবাসরীয় দুপুরে এমন দৃশ্য দেখে থ পথচারীরা। ভরদুপুরে হুলুস্থুলু বেঁধে গেল ওই এলাকায়। কী করে ওই তরুণীদের নিরস্ত করবেন, তা বুঝে উঠতে পারছিলেন না কেউই। কেউ চেষ্টা করলেন তাঁদের বোঝাতে, কেউ-বা নেমে আসতে বললেন তরুণীদের। আবার কেউ উঠে গেলেন বহুতল আবাসনে। কিন্তু নিজেদের অবস্থান থেকে নড়তে রাজি হননি ওই তরুণীরা। এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল পার্কস্ট্রিট এলাকা। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল গোটা এলাকায়। শেষপর্যন্ত পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করল তাঁদের।
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের একেবারে লাগোয়া একটি বহুতল। রবিবার দুপুরে সেই বহুতলেরই সানসেটে উঠে পড়েছিলেন পাঁচ তরুণী। একে অপরের হাত ধরে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিচ্ছিলেন তাঁরা। ঘটনাটি স্থানীয় বাসিন্দাদের নজরে পড়তেই শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। তড়িঘড়ি বেশ কয়েকজন পৌঁছে যান বহুতলের উপরের তলায়। তাঁরাই হাত টেনে ধরে ওই তরুণীদের আটকানোর চেষ্টা করেন। খবর দেওয়া হয় পার্কস্ট্রিট থানায়। ঘটনাস্থলকে গিয়ে ৫ জনকে বুঝিয়ে নিরাপদে নিচে নামিয়ে আনে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, ওই ৫ তরুণী একটি নামী সার্কাসের কর্মী। লকডাউনের পর থেকেই সার্কাসের অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ে। ফলে বেতনে কোপ পড়ে সার্কাস কর্মীদের। তাঁরা জানতে পারেন, মালিক সার্কাসটিকে বন্ধ করে দিতে চলেছেন। তাই এদিন তাঁরা হাজির হন ওই এলাকায়। তাঁদের মধ্যে কেউ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা, কারও বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনায়।
ওই তরুণীদের দাবি, চরম আর্থিক সঙ্কটে দিন কাটছিল তরুণীদের। শেষে এমন অবস্থা হয় যে, বাড়ি ফিরে যাওয়ার টাকা পর্যন্ত তাঁদের হাতে ছিল না। আর্থিক অনটনে মানসিক অবসাদে ভুগে শেষে একসঙ্গেই আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পার্কস্ট্রিট থানার পুলিশ। তাঁরা দাবি করেন, সার্কাসের মালিকের বাড়িও স্যান্ডেল স্ট্রিটেই রয়েছে। তাঁরা বকেয়া বেতন চাইতে মালিকের বাড়িতে পৌঁছান। কিন্তু তাঁদের সেখান থেকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপরেই তাঁরা ওই বহুতলে উঠে পড়েন। তারপর আত্মহত্যার হুমকি দিতে থাকেন।