দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে কর্মবিরতি পালন করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার হলে এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিলেন। দিনের পর দিন সরকারি হাসপাতালে পরিষেবা দেননি তারা। কিন্তু সেই অবস্থান বিক্ষোভের মাসুল গুনেছেন সরকারি হাসপাতালের রোগীরা। দিনের পর দিন ধরে তাঁরা পর্যাপ্ত চিকিৎসা পাননি বলে অভিযোগ তুলেছিলেন রোগীর পরিজনরাই। তবে এবার নয়া তথ্য় সামনে এসেছে সেই জুনিয়র চিকিৎসকদের সম্পর্কে।
সূত্রের খবর, সেই জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ সরকারি হাসপাতালে পরিষেবা না দিলেও তাঁরা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা দিয়েছেন। অন্তত ৭৪ হাজার রোগীর চিকিৎসরা তাঁরা বেসরকারি হাসপাতালে করেছেন বলে জানা গিয়েছে। সেটা সবটাই তাদের কর্মবিরতি চালানোর সময়। তার জেরে সেই সময়ে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় ৫৪.৩৯ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলেও খবর। এছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি বিমা সংস্থার আওতাতেও প্রচুর টাকা তারা আয় করেছেন বলে খবর।
এখানেই প্রশ্ন, একদিকে কর্মবিরতি। দিনের পর দিন ধরে ঠিকঠাক চিকিৎসা পেলেন না সরকারি হাসপাতালের রোগীরা। আউটডোরে গিয়ে ফিরে আসলেন। আর সেই সময়ই আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের একাংশ বেসরকারি হাসপাতালে রীতিমতো প্র্যাকটিশ করে গেলেন। এটা কেমন দ্বিচারিতা?
এদিকে এসব করতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা গুরুতর। অভিযোগ উঠেছে যে জুনিয়র ডাক্তাররা মূলত দুটি নিয়মই ভেঙেছেন। সরকারি বেতন বা ভাতা নেওয়ার পরেও কেন তারা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা দিয়েছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তুলেছে শাসকদলের নেতৃত্ব। এমনকী নিয়মভঙ্গকারী চিকিৎসকদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার দাবিও তোলা হচ্ছে।
আসলে জুনিয়র ডাক্তারদের এখন দুটি আলাদা সংগঠন। একটি হল ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট। অপরটি হল জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন। এই অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকেই এবার নয়া দাবি তোলা হচ্ছে। কেন কর্মবিরতির সময় জুনিয়রদের একাংশ প্রাইভেট প্র্যাকটিশ করেছিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা। আইন অনুসারে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি তোলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে এবার স্বাস্থ্যদফতর তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয় কি না সেটাই দেখার। সেই সঙ্গেই এবার জুনিয়র ডাক্তাররা এই বড় অভিযোগের কী জবাব দেন সেটাও দেখার।