ভিক্টোরিয়াকে বাঁচাতে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে ধর্মতলা-ময়দান চত্বরে কোনওরকমের জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু, হাইকোর্টের সেই নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এখনও ধর্মতলা ময়দান চত্বরে বহু জায়গাতেই ব্যবহৃত হচ্ছে জীবাশ্ম জ্বালানি। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে হোটেলে রান্নার জন্য জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করা হচ্ছে। এবার সেই তালিকায় ময়দানের নামি কয়েকটি ক্লাবের টেন্টের নামও উঠে এল। অভিযোগ উঠেছে, এইসব ক্লাবের ক্যান্টিনে কয়লা জ্বালিয়ে রান্না করা হচ্ছে। এই অবস্থায় এইসব ক্যান্টিনে রান্নার কাজে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধ করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এর জন্য তিন মাস সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভিক্টোরিয়ার ৩ কিমির মধ্যে উনুন জ্বালানো যাবে না, নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
হাইকোর্টের আগের নির্দেশের ভিত্তিতে কলকাতা পুরসভা ওই এলাকা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট তৈরি করে। সেই রিপোর্ট কলকাতা হাইকোর্টে পেশ করে পুরসভা। তাতে হোটেলের পাশাপাশি ক্লাবগুলির নামও জানানো হয়েছে। আদালত নির্দেশ দিয়েছে, এই তিন মাসের মধ্যে এই ক্যান্টিনগুলিতে জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে এলপিজি গ্যাস অথবা বিদ্যুৎ নির্ভর উনুনের ব্যবস্থা করতে হবে। আর তা না হলে ক্লাবগুলির ক্যান্টিন পাকাপাকি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হবে। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং শম্পা সরকারের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে।
কলকাতা পুরসভার রিপোর্টে বলা হয়েছে, যে ময়দান চত্বরে অবস্থিত ৬টি ক্লাবের টেন্টের ক্যান্টিনে রান্নার কাজে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করা হচ্ছে। তারপরেই এই নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, ওই ৬টি ক্লাবের পাশাপাশি যদি অন্য ক্লাব জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে থাকে তাহলে তাদেরকেও একই নির্দেশ মেনে তিন মাসের মধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে এলপিজি অথবা বিদ্যুৎ নির্ভর উনুনের ব্যবস্থা করতে হবে। অর্থাৎ পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ব্যবস্থা করতে হবে। এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিকল্প ব্যবস্থা করতে না পারলে পুরসভাকে ক্যান্টিন পুরোপুরিভাবে বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হবে। হাইকোর্টের নির্দেশ এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ক্যান্টিনগুলি বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার করছে কিনা তা পরিদর্শন করে দেখবে পুরসভা।
প্রসঙ্গত, দূষণের জেরে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের ক্ষতি হচ্ছে। এমনই অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। এর আগেও একাধিবার এনিয়ে প্রকাশ্যে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে নির্দেশ জারি করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু, সেই নির্দেশ মানা হয়নি। এবার সেই তালিকায় সামনে এল ক্লাবের টেন্টগুলির নাম।যদিও অভিযোগ, এই ৬টি ক্লাব ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি ক্লাবের ক্যান্টিনে কয়লা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সেক্ষেত্রে ভোরের দিকে কয়লা ব্যবহার করে সেগুলি সরিয়ে ফেলা হয়। আর পরে এলপিজি লাগানো হয়।