সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় লিখেছিলেন, অর্থই অনর্থের মূল কারণ। এবার বাস্তবে সেটাই দেখা গেল। মাত্র ১০০ টাকার জন্য একজন অন্যজনের প্রাণ নিয়ে নিল। আর এই ঘটনাটি ঘটেছে খাস কলকাতায়। ১০০ টাকার জন্য এক বাস চালককে পিষে মেরে ফেলল আর এক বাস চালক। পুলিশ সূত্রে খবর, চিড়িয়ামোড়–কাশীপুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। ঘাতক বাসটিকে আটক করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম পূর্ণেন্দু নন্দী। তিনি হাওড়া–ব্যারাকপুর রুটের এসি–১২ বাসের চালক ছিলেন। রোজকার মতোই ডানলপের দিক থেকে বাস চালিয়ে আসছিলেন তিনি। চিড়িয়ামোড়ের কাছে উলটো দিক থেকে আসা ৭৮ নম্বর রুটের একটি বাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে পূর্ণেন্দুবাবুর বাসের। ভেঙে যায় এসি বাসের লুকিং গ্লাস। বাস থেকে নেমে পূর্ণেন্দুবাবু ১০০ টাকা ক্ষতিপূরণ চান। এই নিয়েই ৭৮ নম্বর বাসের চালকের সঙ্গে ঝগড়া শুরু হয়। অভিযোগ, এরপর হঠাৎই পূর্ণেন্দুবাবুর উপর দিয়ে ৭৮ নম্বর বাসটি চালিয়ে দেন চালক।
স্থানীয় বাসিন্দারাই পূর্ণেন্দুবাবুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। স্থানীয়রাই খবর দেন পুলিশে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ধৃত বাস চালককে জেরা করা হচ্ছে। মাত্র ১০০ টাকা নিয়ে বচসার জন্য কীভাবে কেউ এমন কাজ করতে পারে তা ভেবে হতবাক পুলিশকর্তারাও।
জানা গিয়েছে, পূর্ণেন্দু নন্দীর বয়স ৩৯ বছর। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী সদস্য ছিলেন তিনি। হুগলীর রিষড়ার বাসিন্দা পূর্ণেন্দুবাবুর বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধা মা, স্ত্রী এবং ৬ বছরের মেয়ে। পূর্ণেন্দুবাবুর এমন মর্মান্তিক পরিণতিতে ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। সামান্য টাকার জন্য কথা কাটাকাটি থেকে কেউ কীভাবে এত নৃশংস কাজ করতে পারেন সেটা ভাবিয়ে তুলেছে সকলকে।