পথ কুকুরদের বংশ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ব্যবস্থা নিল কলকাতা পুরনিগম। সেইসঙ্গে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধির ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে। জন প্রতিনিধিদের এই কাজে অগ্রণী ভূমিকা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের অভিমত, ‘এক দল লোক কুকুরকে খাওয়ায় আর আরেক দল কুকুরকে তাড়ায়। আমরা হলাম, এই দুইয়ের মাঝে রেফারি।’
সম্প্রতি পথ কুকুরদের বংশবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতা পুরনিগম। কলকাতা পুরনিগমের উদ্যোগে পথকুকুরদের নির্বীজকরণ ও টিকাকরণ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। কলকাতার স্টার থিয়েটারে এই প্রকল্পের সূচনা হয়। কীভাবে এই কাজ বাস্তবে রূপায়িত করা যায় বা এই ধরনের কাজ করতে হলে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে, সেবিষয়ে আলোচনা হয়। এই প্রসঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, ‘একবার আমি নিজে এই কাজ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছিলাম। চেতলা পার্কে মর্নিং ওয়ার্কাররা জানিয়েছিলেন, পার্কে কুকুরের মল পড়ে থাকায় তাঁদের সমস্যা হয়। পরে জানা যায়, পার্কে কুকুরকে খাওয়ানো হয় বলেই কুকুররা ভিড় করে। কিছুদিন পকেটের টাকা খরচ করে পার্ক পরিষ্কার করা হয়। কুকুরদের খাওয়ানোর জন্য অন্যত্র ব্যবস্থাও করা হয়। কিন্তু হঠাৎ একদিন তৎকালীন বিধায়ক দেবশ্রী রায় এসে প্রতিবাদ জানান ও পার্কেই কুকুরদের খাওয়ানোর দাবি জানান।’
এই কাজে জন প্রতিনিধিদের দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিয়ে মেয়র জানান, ‘কুকুরদের টিকাকরণের কাজটি জন প্রতিনিধিদের দায়িত্ব নিয়ে করতে হবে। টিকার জন্য কোনও কুকুরকে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই কুকুরকে ফিরিয়ে দিতে হবে। শ্যামবাজারের কুকুর টালিগঞ্জে চলে গেলে ও টালিগঞ্জের কুকুর শ্যামবাজারে চলে গেলে ভোটে তার প্রভাব পড়বে। জন প্রতিনিধিদের এই কাজ দায়িত্ব নিয়ে করতে হবে।’ এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত রাজ্যের প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ কুকুরের থেকে হওয়া জলাতঙ্ক রোগ নিয়ে সচেতন করেন। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘সারা পৃথিবীতে বছরে ৭০ হাজার মানুষ জলাতঙ্ক রোগের শিকার। জলাতঙ্ক মানে নিশ্চিত মৃত্যু। কলকাতায় ১ লাখের কাছাকাছি কুকুর আছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করাটা আমাদের কাজ।’