মাধ্যমিক মানেই ঘটনাবহুল। একদিকে মেধাতালিকায় থাকা উজ্জ্বল ছাত্রছাত্রীদের মুখ। অন্য়দিকে প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে এগিয়ে যাওয়া একাধিক ছাত্রছাত্রীর কাহিনি। তবে বাঁশদ্রোণীর ঘটনাটি ঠিক তেমনটা নয়। একেবারেই অন্যরকম।
এখানে বাঁশদ্রোণীর এক ছাত্রী তার মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল দেখার জন্য সাইবার ক্যাফেতে গিয়েছিল সকাল সকাল। স্কুটিতে ৬ বছরের বোনকেও চাপিয়ে নিয়ে গিয়েছিল সে। কিন্তু ফলাফল দেখতে দিয়ে এত দেরি কেন হচ্ছে? তার উপর আবার সঙ্গে করে বোনকে নিয়ে গিয়েছে…
চিন্তা ক্রমেই বাড়তে থাকে অভিভাবকদের। এদিক ওদিক ফোনাফুনি শুরু করেন বাড়ির লোকজন। এমন সময়ই বাবার মোবাইলে এল সেই মেসেজ। যেখান লেখা ৬ বছরের ওই মেয়েকে কিডন্যাপ করা হয়েছে। ফেরৎ পেতে গেলে এক কোটি টাকা লাগবে। এরপরই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে বাড়ির লোকজনর। চারদিকে খোঁজ খোঁজ। এরপর পুলিশের দ্বারস্থ হন বাড়ির লোকজন। পুলিশও তল্লাশিতে নেমে পড়ে।
তবে প্রথমেই মেয়েটির মোবাইল ট্র্যাক করা হয়। এরপর সোর্স মারফৎ পুলিশের কাছে খবর আসে শিয়ালদা থেকে ট্রেন ধরেছে দুজন। এরপর জানা যায় কৃষ্ণনগরে চলে গিয়েছে তারা। তারপরই সেখান থেকে পুলিশ তাদের সন্ধান পায়। কিন্তু স্কুটিটা গেল কোথায়? একটি মেট্রো স্টেশনের কাছ থেকে সেটি পাওয়া যায়। তাহলে মেসেজটা পাঠাল কে?
এরপর গোটা বিষয়টি পুলিশের কাছে কার্যত জলভাত হয়ে যায়। আসলে মাধ্যমিকে কিছুটা কম নম্বর পেয়েছিল ওই ছাত্রী। ৩১ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল। হয়তো ভেবেছিল এই নম্বর বললে বাড়িতে মান থাকবে না। বাড়ির লোকজন বকাবকি করবে। তারপরই বোনকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে ওই ছাত্রী। নিরুদ্দেশে। তবে কিছুক্ষণ পরেই প্ল্যান বদল। এবার অপহরণের নাটক। কিন্তু দুর্বল চিত্রনাট্য ধরে ফেলে পুলিশ। তাছা়ড়া তাদের কাছে কৃষ্ণনগর একেবারেই অচেনা। সেকারণেই সেখান থেকে কোথায় যাবে সেটা আর বুঝতে পারছিল না। এদিকে ছোট বোনকে নিয়ে আর কত ঘুরবে। একসময় ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল ওই ছাত্রী। তবে কৃষ্ণনগর থানার পুলিশ দেখতে পেয়েছিল ওই দুই বোনকে। তারাই বাঁশদ্রোণী থানায় খবর দেয়। এরপর তাদের ফিরিয়ে নিয়ে আসে পুলিশ। আপাতত পরিবারের কাছে ফিরে গিয়েছে দুই বোন।