আবার সংবাদে বড় করে জায়গা করে নিল যোগী রাজ্য উত্তরপ্রদেশ। তবে সেটা হয়েছে সেক্সটরশনের অভিযোগে। আর এই অভিযোগে উত্তরপ্রদেশের বরেলির এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ। যৌনতার ফাঁদে ফেলে ৬৭ লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। যিনি প্রতারিত হয়েছেন তিনি পার্ক স্ট্রিটের একটি নামী ওষুধ কোম্পানির সিএফও এবং গল্ফগ্রিনের বাসিন্দা। প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
কেমন করে প্রতারিত হলেন? সূত্রের খবর, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে মেসেজ আসে। সেখানে এক মহিলার ছবি ভেসে ওঠে। জানতে চাওয়া হয়, তিনি কেমন আছেন। ওই ব্যক্তি ভেবেছিলেন পরিচিত কেউ তাঁর খোঁজ নিচ্ছেন। তাই বেশ কয়েকবার মেসেজে কথাও হয় দু’জনের। হঠাৎই বলা হয় ভিডিয়ো কলে কথা বলবেন তাঁরা। প্রথমে থমকে গেলেও শেষে রাজি হন তিনি। ভিডিয়ো কলটি ধরতেই ওই ব্যক্তি দেখেন অপরপ্রান্তে নগ্ন অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে এক যুবতী। আর তখন তাঁকে অশ্লীল প্রস্তাব দেওয়া হয়। তখন তিনি ফোন কেটে দেন। তারপর বিভিন্ন নম্বর থেকে আসতে থাকে। তাঁকে বলা হয়, নগ্ন মহিলার সঙ্গে ছবি উঠে গিয়েছে তাঁর। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হবে। দাবি মতো টাকা দিলে গোপন থাকবে বিষয়টি। বাধ্য হয়েই দফায় দফায় ৬৭ লক্ষ টাকা দেন ওই ব্যক্তি।
পুলিশ কী তথ্য পেয়েছে? পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ব্যক্তি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতেই তদন্তে নামে পুলিশ। আর নম্বর যাচাই করে টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করা হয়। তবে যেহেতু একাধিক নম্বর ব্যবহার করেছিল অভিযুক্ত তাই শুরু করতে একটু অসুবিধা হয়। তারপর উত্তরপ্রদেশের বরেলিতে অভিযান চালানো হয় এবং অভিযুক্ত অমিত কুমারকে সেক্সটরশনের অপরাধে সরাসরি জড়িত থাকার জন্য ২৮ এপ্রিল গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্ত তিনটি হোয়্যাটসঅ্যাপ নম্বর এবং দুটি পৃথক ব্যাঙ্কের ১৩টি অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করত। আর ব্ল্যাকমেল করে টাকা আদায় করত। অভিযুক্তকে বরেলির সিজেএম আদালতে তুলে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। রবিবার তাকে শহরের আদালতে তোলা হলে বিচারক ১২ মে পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
আর কী জানা যাচ্ছে? তদন্তকারীরা জানতে পারেন, এই অমিত কুমারের অ্যাকাউন্টে পাঁচ লক্ষ টাকা জমা পড়েছে। বাকি টাকা উত্তরপ্রদেশ–সহ নানা রাজ্যে অনেকের অ্যাকাউন্টে গিয়েছে। সেই অ্যাকাউন্টগুলি ভাড়া নেওয়া। অন্যের নথি ব্যবহার করে খোলা হয়েছিল। প্রতারণার টাকা জমা করতেই এই কাজ করেছিল অমিত। অমিত কুমারের বাড়ি উত্তরপ্রদেশের বরেলিতে। সে এই চক্র চালায়। ডিপিতে থাকত মহিলাদের ছবি। যাতে আকর্ষণ করা যায় পুরুষদের। মহিলা পরিচয় দিয়ে কথা বলত। সেক্সটরশন করার জন্য তোলা চেয়ে ফোন করত। ডিসি (সাইবার) অতুল ভি বলেন, ‘আমরা অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।’