মেট্রো প্রকল্পের কাজে যুক্ত একটি হাইড্রা ক্রেনের ধাক্কা মৃত্যু হল এক নিরাপত্তাকর্মীর। মৃতের নাম শ্যামাপদ মণ্ডল (৫৫)। তিনি মেট্রো প্রকল্পের চত্বরেরই নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪ টে নাগাদ চিংড়িঘাটার কাছে। এমন ঘটনার পরেই ক্রেন চালকের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছয় পুলিশ। ঘটনায় ক্রেন চালককে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: মেট্রো টানেলে জল থইথই অবস্থা থেকে শিক্ষা, এবার পরিস্থিতি মোকাবিলায় হল মক ড্রিল
জানা যাচ্ছে, বহুদিন ধরে মেট্রো প্রকল্পের নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে শ্যামাপদ কাজ করছিলেন। সারারাত ডিউটি করার পর ভোরের দিকে চোখ লেগে গিয়েছিলেন শ্যামাপদের । তিনি তখন চেয়ারে বসেই ঘুমিয়ে পড়েন। সেই সময় আচমকা ক্রেনটি নিরাপত্তা কর্মীকে ধাক্কা মারে এবং চাপা দিয়ে দেয়। শ্যামাপদ ঘুমিয়ে পড়ায় ক্রেনটিকে দেখতে পারেননি। ক্রেনের নিচে চাপা পড়ে যাওয়ায় তার চিৎকারে ছুটে আসেন আশেপাশের শ্রমিকরা। ক্রেন চালকের দাবি, তিনি শ্যামাপদকে দেখতে পারেননি। এটি একটি দুর্ঘটনা বলে দাবি হলেও প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ ক্রেন চালককে গ্রেফতার করেছে। পাশাপাশি ক্রেনটিকে আটক করেছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্যামাপদ ধাপার নতুনপল্লীর বাসিন্দা। সেখানে একটি ঝুপড়িতে সপরিবারে থাকতেন শ্যামাপদ। নিম্নবিত্ত পরিবারে তিনিই ছিলেন একমাত্র রোজগেরে। পরিবারের সদস্য সংখ্যা অনেক হওয়ায় কার্যত শ্যামাপদের ওপরেই পরিবারটি নির্ভরশীল ছিল। তার আচমকা মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে পরিবারে। স্বামী মৃত্যুর খবর পেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন শ্যামাপদর স্ত্রী সরস্বতী মণ্ডল। তারা জানাচ্ছেন, সকাল সাড়ে ৭ টা নাগাদ খবর পান শ্যামাপদ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। পরে প্রগতি ময়দান থানা থেকে তারা জানতে পারে ক্রেনের নিচে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে তার।
এদিকে, ধৃত ক্রেন চালক পুলিশকে জানিয়েছে, শ্যামাপদ ক্রেনের পিছনের দিকে ছিলেন। ক্রেনটি পেছানোর সময় সেই দুর্ঘটনা ঘটে। তখন তিনি শ্যামাপদকে দেখতে পাননি। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে শ্যামাপদ মৃততে ক্রেন চালকের কোনও গাফিলতি ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।