কলকাতার একটি সরকারি পলটেকনিক কলেজে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কয়েকজন সদস্যদের বিরুদ্ধে। টিএমসিপির ওই ছাত্ররা কলেজকে এক পড়ুয়াকে মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠে। তারপরই অবশ্য কলেজ কর্তৃপক্ষ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের কলেজ থেকে বহিষ্কার করেছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের প্রতিবাদ করায় অন্য এক পড়ুয়াকে তৃণমূল পার্টি অফিসে ডেকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। আর এই ঘটনায় কাঠগড়ায় বরাহনগর পুরসভার উপপ্রধান। এর প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান কলেজের পড়ুয়ারা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। সিঁথির বিড়লা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি কলেজে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। মারধরের প্রতিবাদে সিঁথির মোড়ে বিটি রোড অবরোধ করেন পড়ুয়ারা।
আরও পড়ুন: মামলা করেছি, ১ লাখ টাকা দে! JU-র হস্টেলেই বৈঠক ‘র্যাগারদের’, মারা গিয়েছিল ছাত্র
জানা গিয়েছে, গত মাসে দ্বিতীয় বর্ষের ইলেকট্রনিক্স ও টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের পীযূষ হালদার নামে এক ছাত্রকে র্যাগিং করা হয়েছিল। তাকে ব্যাপক মারধর করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে। যার মধ্যে পাঁচজন ওই কলেজেরই ছাত্র এবং বাকি ২ জন অন্য কলেজে ছাত্র। এই ঘটনার পড়ে আক্রান্ত ছাত্র কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান। তার ভিত্তিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেয়। তদন্তের পর কলেজ কর্তৃপক্ষ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পাঁচ ছাত্রকে বহিষ্কার করে।
এদিকে, তারপরেও বিষয়টির মিটমাট হয়নি বলে অভিযোগ। আক্রান্ত পড়ুয়ারা পাশে দাঁড়িয়ে অন্যান্য যে পড়ুয়ারা র্যাগিংয়ের প্রতিবাদ করেছিলেন তার মধ্যে অরিজিৎ পাল নামে ওই কলেজের এক ছাত্র রয়েছেন। বাঁকুড়ার বাসিন্দা ওই পড়ুয়া বরাহনগর পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডে একটি মেসে থাকেন। ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হলেন বরানগর পুরসভার উপপ্রধান দীপ নারায়ণ বসু। অভিযোগ বহিষ্কারের কথা জানতে পেরে রবিবার রাতে অরিজিৎকে ফোন করে উপ প্রধান পার্টি অফিসে ডাকেন। কার্যত হুমকির সুরে ডাকায় ভয় পেয়ে ছাত্রটি পার্টি অফিসে যান। সেখানে তাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, বহিষ্কৃতদের কলেজে ফেরাতে হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। তা না হলে কেরিয়ার শেষ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় ছাত্রকে।
এদিকে এই ঘটনার পরে অরিজিৎ সিঁথি থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে তাকে পাঠানো হয় বরাহনগর থানায়। তবে শেষ পর্যন্ত থানায় না গিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান তিনি। এরপর সোমবার অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে রাস্তা অবরোধ করেন পড়ুয়ারা। যদিও উপপ্রধান অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘কলেজ পড়ুয়াদের মধ্যে কিছু সমস্যা হয়েছিল। তাই রবিবার রাতে তাদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আমার নাম কেন হচ্ছে আমি জানিনা।’