ফের শিরোনামে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেল। ল্যাপটপ চোর সন্দেহে এক ছাত্রকে সেখানে হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই ছাত্রকে এরপর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এক ছাত্রকে চোর সন্দেহে হস্টেলের রুমে হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এদিকে ওই ঘটনায় হস্টেলের আবাসিক ছাত্রদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, বন্ধুদের মধ্য়ে একটি সমস্যা হয়েছিল। তবে এখানে Ragging এর কোনও ব্যাপার নেই।
মেন হস্টেলের ডি ব্লকে এক ছাত্রের ল্যাপটপ পাওয়া যাচ্ছিল না। এরপর ডি ব্লকেরই এক ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। এরপরই তার সঙ্গে বচসা হয়। বুধবার রাতে হস্টেলে এনিয়ে তুমুল শোরগোল পড়ে যায়। সব মিলিয়ে কার্যত প্যানিক অ্যাটাক হয় ওই ছাত্রের। আতঙ্কিত হয়ে যায় ওই ছাত্র। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে যান মেডিক্যাল সুপার চিকিৎসক মিতালি দেব। তিনি গিয়ে বুঝতে পারেন ছাত্রটিকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। তবে তিনি জানিয়েছেন, এখানে Ragging এর কোনও ব্যাপার নেই। তবে ভয়ে পুরো ঘামছিল ছাত্রটি।
তবে তিনি যখন হস্টেলে গিয়েছিলেন তখন কয়েকজন ছাত্রের বাধার মুখে পড়েন তিনি। পরে ওই ছাত্রকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে ল্যাপটপ চুরি বা হারিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করেই যে ঘটনার সূত্রপাত সেটা সকলেই মেনে নিয়েছেন। তবে Ragging সংক্রান্ত কোনও ঘটনা হয়নি বলে দাবি করেছে সব পক্ষই। কিন্তু ল্যাপটপ চুরির অভিযোগ নিয়ে কেন ছাত্রকে হেনস্থা করা হল সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এদিকে এর আগে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে যাদবপুরের হস্টেলে র্যাগিং এর অভিযোগ সামনে আসে। তারপর থেকেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাগিং-রোগ নিয়ে নানা সময়ে নানা কথা উঠে আসছে। কারা র্যাগিং করত, কাদের উপর র্যাগিং হত তা নিয়ে নানা তত্ত্ব রয়েছে। তবে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন তদন্ত কমিটির রিপোর্টে সামনে এসেছে বিস্ফোরক তথ্য়। যেখানে দাবি করা হচ্ছে, ডিন অফ স্টুডেন্টস ও হস্টেলের দুই সুপার জানিয়েছিলেন তাঁরা র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে নানা পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু উলটে তাদেরকে নানারকম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। তাঁদেরকেই হেনস্থা করা হয়েছে।
নিহত ছাত্রের বাবা উল্লেখ করেছিলেন হস্টেলের বাবাদের কথা। তারাই হস্টেলের দন্ডমুন্ডের কর্তা। তাদের হাতেই পরিচালিত হত এই যাদবপুর হস্টেল। সেখানে মাথা গলানোর সাহস ছিল না কারোর। আসলে তারা প্রাক্তন ছাত্র। দিনের পর দিন ধরে তারা হস্টেলে কার্যত বেআইনিভাবে ঘর দখল করে রাখতেন। আর সেই সঙ্গেই জুনিয়রদের উপর চলত র্যাগিং। তবে এবার সামনে আসছে শুধু জুনিয়ররা তাদের অত্যাচারের শিকার হত এমনটা নয়, স্যারেদেরও রেয়াত করত না তারা।
এমনকী করোনার সময় সেফ হোম খোলার নামে যাদবপুরের অন্দরে কার্যত বহিরাগত সিনিয়রদের ঘাঁটি তৈরি হয়ে যায়। সেখানে নাক গলালেই পরিস্থিতি একেবারে ভয়াবহ।