একটা সময় ছিল যখন বর্ষা একটু কমতেই শুরু হত ম্যালেরিয়ার দাপট। এবার ভরা বর্ষার মধ্য়েই কলকাতায় ফের ম্যালেরিয়া। এমনকী ম্যালেরিয়ায় এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলেও খবর। সেক্ষেত্রে মশাবাহিত ম্যালেরিয়া সম্পর্কে এখনই সতর্ক না হলে বড় বিপদ নেমে আসতে পারে।
মৃতের বাড়ি বেহালার শখের বাজারে। ৪৫ বছর বয়সি ওই ব্যক্তিকে বিষ্ণুপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে তাকে টালিগঞ্জের এমআর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তার।
এর জেরে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ দানা বেঁধেছে। কারণ ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বাড়লে সমস্যায় পড়তে পারেন আমজনতা। তবে দিন কয়েক আগেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হয়নি। তবে এনিয়ে খবর সামনে আসতেই নানা কথা উঠতে শুরু করেছে।
এদিকে ডেঙ্গু নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই একটা উদ্বেগ রয়েছে। এবার তার সঙ্গে যুক্ত হল ম্যালেরিয়াজনিত উদ্বেগ। সেক্ষেত্রে এখনই সাবধান না হলে সমস্যা হতে পারে।
কেবলমাত্র রাতের বেলাতেই নয় দিনের বেলাতেও মশারি ব্যবহার করা যেতে পারে। জমা জলে কোথাও যাতে মশা না জন্মায় সেটা দেখা দরকার। বর্ষাকালে সাধারণত দেখা যায় যে বার বার বৃষ্টির জেরে বিভিন্ন জায়গায় জল জমে। সেই জমা জলে মশার লার্ভা জন্মাতে পারে।
এদিকে ২০২৩ সালের মে মাসে একটি রিপোর্ট সামনে এসেছিল। সেবার পশ্চিমবঙ্গে ডেঙ্গু ম্যালেরিয়ার রিপোর্টে এবার উঠে এসেছিল অত্যন্ত উদ্বেগজনক তথ্য়। সেখানে দেখা গিয়েছিল দেশের মধ্যে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া ছড়ানোর নিরিখে একেবারে শীর্ষ স্থানে রয়েছে বাংলা।
পরিসংখ্য়ানে দেখা গিয়েছিল, ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৬৭ হাজারের বেশি মানুষ। অন্য়দিকে ম্যালেরিয়ার হিসাবটাও বেশ উদ্বেগের। এখানে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে জানা গিয়েছে সব মিলিয়ে দেশের মধ্য়ে মশা বাহিত রোগে আক্রান্তের নিরিখে একেবারে শীর্ষে রয়েছে বাংলা।
এদিকে ডেঙ্গু-ম্য়ালেরিয়ার রিপোর্ট সঠিক সময়ে কেন্দ্রকে দেওয়া হয় না বলেও অভিযোগ ওঠে। পরে অবশ্য় কেন্দ্রের কাছে রাজ্য়ের স্বাস্থ্য দফতর রিপোর্ট পাঠায় বলে জানা গিয়েছে। আর সেই রিপোর্টেই লুকিয়ে ছিল উদ্বেগের ছবি। দেখা যাচ্ছে ২০২২ সালের ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া মিলিয়ে ১ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন। ডেঙ্গুতেও একেবারে দেশের মধ্য়ে এক নম্বরে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। সারা দেশে ম্য়ালেরিয়া আক্রান্তের ক্ষেত্রে দেশের মধ্য়ে একেবারে প্রথম স্থানে বাংলা।
মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের নিরিখে উত্তরপ্রদেশ রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৯ হাজারের কিছু বেশি। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে একসঙ্গে এই রিপোর্ট সামনে আনা হয়েছে। তবে পরিসংখ্য়ান বলছে ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে অনেকটাই বেশি আক্রান্ত হয়েছে মশাবাহিত রোগে। তবে বাংলায় এভাবে মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বেড়ে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবে আতঙ্ক দানা বেঁধেছে।