শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে অযোগ্যদের পুনর্বহাল করতে হাইকোর্টে করা আবেদন প্রত্যাহার করতে চেয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল স্কুল সার্ভিস কমিশন। সঙ্গে এদিন আদালত স্পষ্ট করেছে, নতুন পদ তৈরি করে অবৈধভাবে নিযুক্তদের চাকরি রক্ষা করার প্রবণতা ভয়াবহ। একই সঙ্গে সরকারের যে সমস্ত মুখপাত্র ও মন্ত্রীরা ‘কারও চাকরি যাবে না’ বলে মন্তব্য করে বেড়াচ্ছেন তাঁদের ‘দালাল’ বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি।
অযোগ্যভাবে নিযুক্তদের পুনর্বহালের দাবিতে গত ২৮ সেপ্টেম্বর আদালতে ৩টি পৃথক আবেদন জমা দিয়েছিল SSC. তাতে জানানো হয়, বেআইনিভাবে নিযুক্ত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কোথাও কোনও FIR হয়নি। ফলে তাদের সরকারের তৈরি করা শূন্যপদে নিয়োগ করতে চায় SSC. সেই আবেদনগুলি প্রত্যাহার করতে চেয়ে বুধবার আদালতে আবেদন করেন SSC-র আইনজীবী। এর পরই গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি প্রশ্ন করেন, এই আবেদনগুলি কি SSC নিজে লিখেছিল? না কি পিছন থেকে SSC-কে দিয়ে কেউ এই আবেদন লিখিয়েছে? আমার এই বিশ্বাসের পিছনে পর্যাপ্ত কারণ রয়েছে। কিছু মানুষ SSC-কে সামনে রেখে বিশ্বকাপ খেলার চেষ্টা করছে। এই ব্যক্তিরা নিয়োগ দুর্নীতির তার ধরে এখনো টেনে চলেছে। এই ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করা প্রয়োজন।
সঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, নতুন শূন্যপদ তৈরি করে অযোগ্যদের নিয়োগ করার আবেদন বৈধ কি না তা খতিয়ে দেখবেন তিনি। তাতে কারও কারও সমস্যা হতে পারে। কিন্তু বেআইনিভাবে কাউকে নিয়োগ দিতে দেবে না আদালত। তিনি প্রশ্ন করেন, বেআইনিভাবে চাকরিপাওয়া ব্যক্তিদের শূন্যপদ তৈরি করে নিয়োগের বুদ্ধি কার? অবৈধদের নিয়োগের জন্য শূন্যপদ তৈরি একটা বিপজ্জনক প্রবণতা বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, চক্ষুলজ্জা ভুলে অযোগ্যদের চাকরি বাঁচাতে এই ধরণের চেষ্টা হচ্ছে।
বিচারপতি বলেন, আমার চোখে এই আবেদনপত্রগুলি বেনামি। কারণ স্কুল সার্ভিস কমিশনকে দিয়ে এই আবেদনপত্র লেখানো হয়েছে। আর কে লিখিয়েছে তা আমার জানা নেই। তাই যে ফাইলের ভিত্তিতে এই আবেদনপত্র লেখা হয়েছে তা নিয়ে বেলা ৩টের মধ্যে SSC-র সচিবকে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
এমনকী এদিন শাসকদলের বেশ কিছু মুখপাত্র ও মন্ত্রীর মন্তব্যেও অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘কিছু দালাল বলে বেড়াচ্ছে কারও চাকরি যাবে না। এদের চিহ্নিত করা প্রয়োজন।’