শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৃণমূলের বেলাগাম আক্রমণের মুখে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শুক্রবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলের এক মুখপাত্র বিচারপতিকে অরণ্যদেব গাঙ্গুলি বলে সম্মোধন করেন। সঙ্গে বলেন, ‘যান যা পারেন করে নিন।’
এদিন তৃণমূলের মুখপাত্র দৃশ্যত ছিলেন ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, ‘বিচারব্যবস্থকে আমরা সম্মান করি। কারণ সব বিচারক ন্যায় বিচার দেওয়ার জন্য বসে আছেন। নীরবে তাঁরা কাজ করে যান। ব্যক্তিগত ইমেজ বিল্ডিংয়ের খেলায় তাঁরা যান না। যেখানে ভুল, ১০০ বার বলবেন। সরকারের ভুল হলেও বলবেন। প্রভাবশালীর ভুল হলেও বলবেন। কিন্তু তার জন্য একটা দল তুলে দিতে বলব। ওমুককে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসা করব, এটা কী?’
বিচারপতির ‘দালাল মুখপাত্র’ মন্তব্যকে কটাক্ষ করে ওই মুখপাত্র বলেন, ‘তাদের দলে অনেক মুখপাত্র আছে। আমিও একজন মুখপাত্র। যার বলার ইচ্ছা হয় মুখপাত্রদের নাম করে বলতে পারেন। আমিও কারও নাম করে বলছি না। আমি ধরে নিচ্ছি AG, অরণ্যদেব গাঙ্গুলি। কেউ হয়তো নিজেকে অরণ্যদেব ভাবছেন। বিচারকের চেয়ারের প্রোটেকশন নিয়ে কেউ যদি বলে আমার দলকে তুলে দেবে মুখপাত্র হিসাবে তাঁকে কি আমি রসগোল্লা খাওয়াবো? যান অরণ্যদেব গাঙ্গুলি, আপনার যা ক্ষমতা আছে করে নিন’।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে বেলাগাম আক্রমণ করে তৃণমূলের ওই মুখপাত্র বলেন, ‘রাজনৈতিক উইশ লিস্ট বিচারকের আসনে বসে বলা যায় না। কী দেখাচ্ছেন? পশ্চিমবঙ্গের বদনাম করতে চাইছেন? বলুন, ত্রিপুরায় ১০,৩২৩ জনের চাকরি চলে গেছে বামফ্রন্টের জন্যে। কোর্টের রায় ছিল, আমরা বলছি না’।
তাঁর দাবি, ‘জটটা খোলার চেষ্টা হচ্ছে। যতবার আন্দোলনকারীরা চেয়েছেন এক্তিয়ার না থাকলেও তাদের সঙ্গে বসেছি। যন্ত্রণা বোঝার চেষ্টা করেছি। জানিয়েছি যেখানে যেখানে জানানোর। আর আপনি হিরো সেজে ওখানে বসে বলবেন দালাল মুখপাত্র? বিচারকের আসনের অপব্যবহার করছেন। নিজের ইমেজ বিল্ডিং করছেন। অবসরের পর রাজনীতি করার জমি তৈরি করছেন। বিচারকের হাতে ক্ষমতা আছে। তিনি নির্দেশ দেবেন। এসব কী কথা? দল তুলে দিতে বলব?’
শুক্রবার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, ‘আমি নির্বাচন কমিশনকে তৃণমূলের প্রতিক প্রত্যাহার করতে বলব। দল হিসাবে তাদের স্বীকৃতিও প্রত্যাহারে করে নিতে বলব নির্বাচন কমিশনকে। সংবিধান নিয়ে যা খুশি করা যায় না।’