কথা ছিল অমিত শাহ আসবেন। কিন্তু তিনি আসছেন না। তাই গোটা বঙ্গ–বিজেপি ঝাঁপাচ্ছে ‘বিবেকের ডাকে’ সাড়া দিতে। পিছিয়ে থাকবে না তৃণমূলও। তাই বিবেকানন্দকে হাতিয়ার করে এবার আসরে রাজ্যের শাসক দলও। আর সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ১২ জানুয়ারি, বিবেকানন্দর জন্মদিনে কলকাতার পথে নামছেন একদিকে বিজেপি’র পক্ষ থেকে শুভেন্দু অধিকারী। আর তৃণমূলের তরফে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে ১২ জানুয়ারি শ্যামবাজার থেকে সিমলা স্ট্রিট অর্থাৎ বিবেকানন্দের বাড়ি পর্যন্ত পদযাত্রা হবে। দেশের যুব সম্প্রদায়ের আইকন স্বামী বিবেকানন্দের জন্মজয়ন্তী উদযাপনে তৃণমূল কংগ্রেসও পালটা সামনে আনল দলের যুব সংগঠনকে। ওই দিন উত্তর কলকাতায় শুভেন্দু যখন মিছিল করবেন, তখন দক্ষিণ কলকাতায় বিবেক জয়ন্তী পালিত হবে তৃণমূল যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে। তবে স্বামীজীর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আয়োজিত ওই মিছিলে কোনও রাজনৈতিক পতাকা থাকবে না বলেই জানা গিয়েছে।
গোলপার্ক থেকে হাজরা মোড় পর্যন্ত মিছিলের নেতৃত্ব দেবেন তৃণমূলে অঘোষিত ‘দু’নম্বর’ অভিষেক। তাঁর নেতৃত্বে আয়োজিত মিছিলে বৃহৎ জনসমাগমের উদ্যোগও শুরু হয়েছে জোরকদমে। গোলপার্কের বিবেকানন্দ মূর্তিতে মাল্যদান করে জন্মদিন উদযাপনের সূচনা করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দুই মিছিলের মধ্যে কলেবরে কোনটি বেশি বড় হয় এবং কোনটি অধিক জনবহুল হয়, সেদিকে অবশ্যই নজর থাকবে সকলের বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড় থেকে সিমলায় বিবেকানন্দর বাড়ি পর্যন্ত একটি শোভাযাত্রা হবে। হাঁটবেন দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, লকেট চট্টোপাধ্যায়–সহ বিজেপির অন্য নেতানেত্রীরা। তবে দলীয় ঝান্ডার বদলে শোভাযাত্রায় থাকবে শুধু জাতীয় পতাকা। অন্যদিকে অভিষেকের কালীঘাটের দফতর থেকে দক্ষিণ কলকাতা তো বটেই, এছাড়াও উত্তর কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং হুগলি জেলা তৃণমূলের সমস্ত নেতাকে ওই মিছিলে নিয়ে হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বার্তা পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ‘মিছিলে উপস্থিতি বাধ্যতামূলক’।
উল্লেখ্য, গত ১৯ ডিসেম্বর বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার দিন থেকেই অভিষেককে তাক করে ‘তোলাবাজ ভাইপো’ হটানোর ডাক দিয়েছেন শুভেন্দু। কখনও ডায়মন্ডহারবার, কখনও আরামবাগ, কখনও আবার গঙ্গারামপুরের জনসভা থেকে শুভেন্দুর নাম না করে তার জবাবও দিয়েছেন অভিষেক। তাই ১২ জানুয়ারি দু’পক্ষের মিছিল নিঃসন্দেহে হাইভোল্টেজ হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।