তৃণমূলের অন্দরে কান পাতলে এখন শোনা যায় দুটি পন্থীর কাহিনি। কিন্তু কখন যে কে কোন শিবিরে চলে যান সেটা অবশ্য আগাম বোঝা যায় না। অনেকের মতে, ২০২৬ সালের ভোটের আগে দলের অনেকেই বুঝতে পারছেন না , কোন শিবিরে থাকলে 'লাভ' বেশি।
আরজিকর প্রতিবাদের নামে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে আক্রমণ করেছেন যে শিল্পীরা, তাঁদের বয়কট করার আহ্বান জানিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। একেবারে জোর গলায় বার বার বলছিলেন তিনি। আর বৃহস্পতিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় কার্যত কুণাল ঘোষের অবস্থানকে দলের অবস্থান বলে একেবারেই মানতে চাননি।কার্যত পাত্তাই দিতে চাননি কুণাল ঘোষের বক্তব্যকে। আর তারপরই শোরগোল পড়ে যায়। তাহলে কি কুণাল ঘোষ এতদিন ধরে ওই 'বয়কট' ইস্যুতে যা বলে এলেন সেটাতে দলের অনুমোদন নেই?
এদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় মুখ খোলার পরেই এবার এক্স হ্যান্ডেলে ফের সেই ইস্য়ু তুলে ধরে সাফাই দিলেন কুণাল ঘোষ।
সেখানে আগের একটি টুইটকেও তিনি তুলে ধরে কুণাল লিখেছেন, আমার দুদিন আগের পোস্ট। আর একবার পড়ে নিন। সঙ্গে এখন-
বারবার আমরা বলেছি, প্রতিবাদ আর প্রতিবাদের নামে পরিকল্পিত অসভ্যতা; মুখ্যমন্ত্রী, সরকার, দল ও কর্মীদের সম্পর্কে কুৎসিত ভাষা, প্ররোচনার তফাৎ আছে।
আমরা দ্বিতীয় অংশের প্রসঙ্গে কথা বলেছি। বলেছি তৃণমূল নেতৃত্ব আয়োজিত অনুষ্ঠানে এদের ডাকলে কর্মীদের আবেগ আঘাত পাবে। সাধারণ গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ, প্রতিবাদীর কথা বলিনি। দুটো মেলাবেন না। যা বলেছি ঠিক বলেছি। গতকাল বলেছি, আজ বলছি, আগামীকালও বলব। তৃণমূলকর্মীদের বিবেক বিষয়টা বিচার করবে। আর এবিষয়ে দলের সর্বোচ্চ নেত্রী, চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যাঁকে এই ইস্যুতে সর্বোচ্চ আক্রমণ, চক্রান্ত সহ্য করতে হয়েছে, তিনি যা বলবেন, সেটাই শেষ কথা।
এরপর তিনি আগের একটি পোস্টকে যুক্ত করেছেন।
সেই পোস্টে কী আছে?
আগের পোস্টে তিনি লিখেছিলেন,
'বিভ্রান্তি রাখবেন না। আবার বলছি।
1) RGKar এর জঘন্য ঘটনার আমরা সবাই প্রতিবাদী। যাঁরা মিছিল, সভা করেছেন, করতেই পারেন।
2) বিরোধী দল তাদের কাজ করবে। করতেই পারে।
3) নাগরিকরা উদ্বেগ জানাবেন। জানাতেই পারেন। শিল্পীরাও প্রতিবাদী মিছিলে হাঁটতেই পারেন।
কিন্তু যে শিল্পীরা পরিকল্পিত কুৎসা করেছেন, মুখ্যমন্ত্রীসহ সরকার ও দলকে জঘন্য ভাষায় আক্রমণ করেছেন, সরকার ফেলে দেওয়ার কথা বলেছেন, তৃণমূল সমর্থকদের কুৎসিত ভাষায় অপমান করেছেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্ররোচনা ছড়িয়েছেন, তাঁদের এই শীতের মঞ্চে তৃণমূল নেতাদের আয়োজিত জলসা বা অনুষ্ঠানে যেন মঞ্চে না দেখা যায়। এই শীতে এঁদের বয়কট করা হোক। কোনো তৃণমূল নেতার কোনো বিভ্রান্তি থাকলে উচ্চতর নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে নিন। কর্মী সমর্থকদের আবেগকে সম্মান দিন।'
অভিষেক অবশ্য় বলেছিলেন, পার্টির তরফে কেউ বলেছে? কোনও নেটিশ দেখেছেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বা আমি জেনারেল সেক্রেটারি কিছু বলেছি?
এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, কুণাল ঘোষের কথা কি পার্টির কথা নয়? কুণাল লিখেছিলেন, কোনো তৃণমূল নেতার কোনো বিভ্রান্তি থাকলে উচ্চতর নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে নিন।
অথচ অভিষেক সাফ জানিয়ে দিলেন , মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বা আমি জেনারেল সেক্রেটারি কিছু বলেছি?