একদিকে যখন নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইডি জিজ্ঞাসাবাদ না করায় প্রশ্ন তুলে তাদের কড়া কড়া প্রশ্ন করছে আদালত, তখন পালটা ইডির তৎপরতার বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে করা এই মামলায় অভিষেকের আইনজীবী আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দাবি করেছেন, তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে ED-র দায়ের করা ECIR খারিজের আবেদনের রায়দান যখন স্থগিত তখন কি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি এই তৎপরতা দেখাতে পারে? শুনানি শেষ হয়ে যাওয়ার পর কোনও মামলায় এই ধরণের আবেদন গ্রহণ করা যায় কি না তা বিবেচনা করে এব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাবেন বিচারপতি ঘোষ।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের ECIR খারিজের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গত মাসে সেই মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। রায়দান স্থগিত রেখেছেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। এরই মধ্যে গত ২০ অগাস্ট লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস নামে একটি সংস্থার নিউ আলিপুরের দফতরে তল্লাশি চালায় ইডি। প্রচুর নথি ছাড়াও ১টি মোবাইল ফোন ও ১টি কম্পিউটার হার্ড ডিস্ক বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে যায় তারা। ইডির দাবি ওই সংস্থার সিইও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতির কালো টাকা ঘুরপথে ওই সংস্থায় এসেছে বলে দাবি তদন্তকারীদের।
সোমবার প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির একটি মামলায় বিচারপতি অমৃতা সিনহার ভর্ৎসনার মুখে পড়ে ইডি। বিচারপতি ইডির আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, আপনারা বলছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের সিইও। তাহলে তাঁকে তলব করে জেরা করছেন না কেন? আপনারা কি কাউকে ভয় পাচ্ছেন? নীচের থেকে তদন্ত করে আপনারা এই পর্যন্ত এসেছেন। এখন আপনাদের তদন্ত করতে বাধা দিচ্ছে কে? যদিও ইডির তরফে জানানো হয়, এই তদন্তে অভিষেককে আবার তলব করবে ইডি।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, বিচারপতি অমৃতা সিনহার মন্তব্যের পর অভিষেকের কাছে ইডির সমন পৌঁছনো সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করা হচ্ছে। বিচারপতি সিনহার বেঞ্চ থেকে রেহাই পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই দেখে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
বিরোধীদের মতে, এভাবে বেঞ্চ হপিং (এক বিচারপতির এজলাস থেকে আরেক বিচারপতির বেঞ্চে যাওয়া) করে কোনও লাভ হবে না। এর আগে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নানা রকম অভিযোগ তুলে মামলা বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে স্থানান্তর করিয়েছেন অভিষেক। কিন্তু হাকিম বদলালেও হুকুম বদলায়নি।