হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল সকাল ১১টায়। তার দুই মিনিট আগেই নিজাম প্যালেসে ঢুকলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত কুন্তল ঘোষের লেখা চিঠি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতেই অভিষেককে তলব করা হয়েছে। এই আবহে আজ প্রায় ১০টা ৫০ মিনিট নাগাদ কালো গাড়িতে করে নিজাম প্যালেসের দিকে রওনা দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগেই অবশ্য সকাল থেকে কলকাতা পুলিশের তরফে নিজামকে ঘিরে নিরপত্তা বাড়ানো হয়েছিল। সেখানে ডিসি পদমর্যাদার আধিকারিকও নিজে সেখানে উপস্থিত। এদিকে আজ সিবিআই হাজিরার আগে সিবিআই আধিকারিককে চিঠি দিয়ে নিজের অসন্তোষের কথাও জানান অভিষেক।
জানা গিয়েছে, আজ অভিষেককে জেরা করতে ১০ জন আধিকারিকের দল প্রশ্নমালা তৈরি করেছেন। অভিষেকের থেকে আজ মূলত জানতে চাওয়া হবে, কুন্তল ঘোষ কেন তাঁর চিঠিতে অভিষেকের নাম লিখেছিলেন? তাছাড়া কুন্তলের সঙ্গে অভিষেকের সম্পর্ক প্রসঙ্গেও প্রশ্ন করা হবে তৃণমূল সাংসদকে। এদিকে নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃতদের ওপর যে তাঁর নাম বলার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে, সেই বিষয়ে আগেভাগেই তিনি কীভাবে জেনেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে অভিষেকের বয়ান রেকর্ড করা হবে আজ। এদিকে নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেওয়ার আগে সিবিআই-কে চিঠি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, তাঁকে তলবের পর ২৪ ঘণ্টাও সময় দেওয়া হয়নি হাজিরার জন্য। তা নিয়ে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এদিকে চিঠিতে তিনি জানান, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে তিনি সুপ্রিম কোর্টে লিভ পিটিশন দাখিল করেছেন।
এর আগে যুব তৃণমূলের সমাবেশে অভিষেক দাবি করেছিলেন, নিয়োগ দুর্নীতিতে তাঁর নাম বলানোর জন্য ধৃতদের ওপর চাপ দিচ্ছে ইডি, সিবিআই। এরপরই কুন্তল ঘোষ প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারের মাধ্যমে চিঠি দিয়ে হেস্টিংস থানায় অভিযোগ জানান যে তাঁকে দিয়ে অভিষেকের নাম বলানোর জন্য চাপ দিচ্ছে ইডি, সিবিআই। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, দ্রুত কুন্তল ও অভিষেককে জেরা করা উচিত তদন্তকারীদের। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে যান অভিষেক। সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের টিভিতে দেওয়া সাক্ষাৎকারের বিষয়টি তুলে ধরেন অভিষেকের আইনজীবী। বলা হয়, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন, তাতে অভিষেকের প্রতি তাঁর বিরূপ মনোভাব ফুটে উঠেছে। সেই মামলার প্রেক্ষিতে সেই নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলাটি সরানো হয় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে। সুপ্রিম নির্দেশিকার পর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে মামলার ফাইল চেয়ে পাঠায় কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির কার্যালয়। পরে সেই ফাইল বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে পাঠানো হয়। তবে ক্ষণস্থায়ী থাকে অভিষেকের স্বস্তি। বিচারপতি সিনহাও ইডি, সিবিআই জেরার পক্ষে নির্দেশ দেন। এই আবহে চরম অস্বস্তিতে পড়ে ফের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন অভিষেক। তবে আজ তিনি নিজামে হাজিরা দিলেন।