এর আগে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন যে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেরা করতে পারবেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তকারী অফিসাররা। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে স্বস্তি পেয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তাঁর সেই স্বস্তি ক্ষণস্থায়ী হল। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে কুন্তল ঘোষ সংক্রান্ত নিয়োগ দুর্নীতি মামলা সরেছে বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। এই আবহে আজকে সেই মামলার শুননি হয়। সেখানে বিচারপতি সিনহা প্রশ্ন করেন, 'তদন্তে সহযোগিতা করতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্যা কোথায়?' তিনি আরও পর্যবেক্ষণ করেন, তদন্তকারীরা প্রয়োজনে যে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন। পাশাপাশি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে যুক্ত করার নির্দেশ দেন তিনি।
উল্লেখ্য, বিচারাধীন বিষয়ে একটি নির্দিষ্ট সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার কারণেই অভিষেক ও কুন্তলের মামলাটি সরেছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে। এদিকে কয়েক সপ্তাহ আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষ চিঠি লিখে অভিযোগ করেছিলেন যে কেন্দ্রীয় সংস্থা তাঁকে দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলানোর জন্য চাপ দিচ্ছে। সেই চিঠির প্রেক্ষিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান যে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে যান অভিষেক। সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকারের বিষয়টি তুলে ধরেন অভিষেকের আইনজীবী। বলা হয়, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন, তাতে অভিষেকের প্রতি তাঁর বিরূপ মনোভাব ফুটে উঠেছে। সেই মামলার প্রেক্ষিতে সেই নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলাটি সরানো হয়েছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে।
সুপ্রিম নির্দেশিকার পর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে মামলার ফাইল চেয়ে পাঠায় কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির কার্যালয়। পরে সেই ফাইল বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে পাঠানো হয়। এই আবহে আজ মামলার শুনানি হয় বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। সেই সময় কুন্তল ঘোষের চিঠির বিষয়টি উত্থাপিত হয়। তখন বিচারপতি প্রশ্ন করেন, 'তদন্তে সহযোগিতা করতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্যা কোথায়?' তিনি কার্যত অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদের পক্ষেই সওয়াল করেন। এরপর তৃণমূল নেতাকে মামলার সঙ্গে যুক্ত করার নির্দেশ দেন তিনি। এর আগে সুপ্রিম কোর্টে অভিষেক দাবি করেছিলেন, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তিনি কোনও পক্ষ নন। এই আবহে তাঁকে কেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তবে এবার অভিষেক এই মামলার পার্টি হতে চলেছেন। এবার তাঁকে এই মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মুখোমুখি হতে হয় কি না, সেটাই দেখার।