সংকটে পড়লেই ড্যামেজ কন্ট্রোলের নানা পন্থা বের করে নেয় তৃণমূল। আরজি করের ঘটনার পরে গোটা রাজ্যজুড়ে যেভাবে আন্দোলনের মেঘ ঘনিয়েছিল তাতে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছিল শাসকদল তৃণমূল। তবে যথারীতি সেই সংকট থেকে মোকাবিলার রাস্তাও বের করে নিয়েছে ঘাসফুল শিবির। এবার সংকট মোচনে নবজোয়ার।
সূত্রের খবর আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ফের নবজোয়ার কর্মসূচি শুরু করতে পারেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তবে এনিয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্তের কথা এখনও জানা যায়নি। তবে সূত্রের খবর, এনিয়ে প্রাথমিক প্রস্তুতি চলছে।
চোখের অপারেশনের জন্য বিদেশে গিয়েছিলেন অভিষেক। সেখান থেকে ফিরে এসেছেন তিনি। তার মধ্যে সাংগঠনিক নানা সিদ্ধান্তও নিয়েছেন। তবে তৃণমূলের অন্দরমহলের খবর, দিন কয়েকের মধ্যেই দলের অন্দরে কিছু রদবদল হতে পারে। সেই সঙ্গেই জানুয়ারির প্রথমে দলের তরফে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হতে পারে।
তারপরই নবজোয়ারের ঘোষণা হতে পারে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, এবারও উত্তরবঙ্গ থেকে এই কর্মসূচি শুরু হতে পারে। তবে রুটের ব্যাপারে চূড়ান্তভাবে কিছু জানা যায়নি।
এদিকে এর আগে ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের আগে নবজোয়ার কর্মসূচির আয়োজন করেছিল তৃণমূল। সেবার হয়েছিল ৫১ দিনের নবজোয়ার কর্মসূচি। একেবারে এলাহি ব্যাপার। বিলাসবহুল তাঁবুতে থাকার ব্যবস্থা। চারদিকে পুলিশের কড়া নজরদারি। দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় মিটিংয়ে বসতেন অভিষেক।
এদিকে সেই নবজোয়ার কর্মসূচি কতটা প্রভাব ফেলতে পেরেছিল ভোটবাক্সে তা নিয়ে নানা আলোচনা হয়েছে অতীতে। শেষ পর্যন্ত দেখা গিয়েছে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে সাড়ে ৪ হাজার কিমি পথ ধরে গিয়েছিলেন সেখানকার সংলগ্ন পঞ্চায়েতগুলিতে ভালো ফল করেছিল তৃণমূল।
সেবার কোচবিহার থেকে শুরু হয়েছিল অভিষেকের নবজোয়ার কর্মসূচি। একের পর এক কেন্দ্রকে ছুঁয়ে যায় সেই কর্মসূচি। দলের যাবতীয় দ্বন্দ্ব মিটিয়ে দলকে একসূত্রে গাঁথার ক্ষেত্রে যথেষ্ট কার্যকরী ছিল এই নবজোয়ার কর্মসূচি। তবে বিরোধীরা সেই সময় এনিয়ে কটাক্ষ করতেন। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী সেই সময় জানিয়েছিলেন, ভাইপোর এই যাত্রা আসলে ভোট লুঠের মহড়া। যেখানে ভোট লুঠ করতে পারেনি সেখানে সার্টিফিকেট লুঠ করেছে।
আগামী ২০২৬ সালে বিধানসভা ভোট। তার আগে দলকে ঢেলে সাজাতে চাইছে তৃণমূল। যেখানে যা ক্ষত রয়েছে সবটা মেরামতির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আর সেই ক্ষত সারানোর ক্ষেত্রে নবজোয়ার কর্মসূচির কার্যত বিকল্প নেই।