ছাত্র সেল গঠন হয়েছে সবে ২০১৯ সালে। তা সত্ত্বেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বড়সড় সাফল্য পেল অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)।
লাল দুর্গ হিসেবে পরিচিত যাদবপুরে ফাটল ধরাল গেরুয়া শিবির। ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বামেদের পাশাপাশি টিএমসিপিকেও যথেষ্ট চাপে ফেলে চমক দিল এবিভিপি।
এ দিন নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরে সংগঠনের সর্বভারতীয় সম্পাদক সপ্তর্ষী সরকার বলেন, ‘যাদবপুরে এবারই আমাদের প্রথম লড়াই এবং তাতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েচে যে কলা বিভাগে তৃণমূল এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এসএফআই-এর চেয়ে এগিয়ে আমরাই। জেলার সমস্ত কলেজ এবং রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংগঠন নির্বাচনের জন্য আমরা দাবি জানাচ্ছি। প্রতিটি নির্বাচনে আমরাই জয়ী হব।’
তাঁর বক্তব্যের বিরোধিতা করে এসএফআই-এর জাতীয় সাধারণ সম্পাদক ময়ুখ বিশ্বাস বলেন, ‘ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে এবিভিপি প্রার্থীদের জয়ী প্রার্থীর তুলনায় মাত্র ১/১০ পরিমাণ ভোট পেয়েছেন। অন্য দিকে, তুলনামূলক সাহিত্য এবং অর্থনীতি বিভাগে এই প্রথম জিতেছেন এসএফআই প্রার্থী।’
এবারের নির্বাচনে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে প্রথমে পঞ্চাশ আসনে এগিয়ে থাকার পরে ১০০ আসনের ফল ঘোষণার পরেও দ্বিতীয় স্থান দখলে রাখল এবিভিপি। তিন নম্বর স্থান পেয়েছে এসএফআই আর প্রথম স্থানে অতিবাম ছাত্ডির সংগঠন এসএফ। চতুর্থ স্থানে থাকল টিএমসিপি।
উল্লেখ্য, এই প্রথম কেন্দ্রীয় প্যানেলে প্রার্থী দিয়েছিল এবিভিপি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সল্টলেক ক্যাম্পাসে দুর্দান্ত লড়াই করেও হারতে হয়েছে সংগঠনকে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এবিভিপির উপস্থিতি প্রথম স্পষ্ট হয় ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে, যখন আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠনের ডাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তাঁকে ঘিরে বামপন্থী সংগঠনের সমর্থক পড়ুয়াদের বিক্ষোভ কেন্দ্র করে তুমুল অশান্তি তৈরি হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তি সত্ত্বেও এই পরিস্থিতিতে মন্ত্রীকে উদ্ধার করতে গাড়ি নিয়ে হাজির হতে হয় স্বয়ং রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে।
এ দিন ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ফলাফলকে স্বাগত জানিয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতীম রায়। তিনি জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের স্বাধীনতায় কেন্দ্র ও রাজ্যের অগণতান্ত্রিক সরকারের হস্তক্ষেপের বিরোধিতাই স্পষ্ট করেছে ভোটের ফল।’