গত রবিবারের ঘটনা। বিহারের গয়া থেকে দুদিন বয়সি এক কন্যাকে শালিমার স্টেশনের বাইরে বিক্রি করার ছক কষা হয়েছিল। সেই সময় গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়েছিল সিআইডি। সেই সময় শিশু বিক্রি চক্রের সঙ্গে যুক্ত দম্পতি মানিক হালদার ও মুকুল হালদারকে আটক করেছিল সিআইডি। এরপর শিশুটিকে উদ্ধার করে হোমে পাঠানো হয়। এদিকে সেই ঘটনার তদন্তে নেমে সিআইডির হাতে যেসব তথ্য উঠে আসছে তা ভয়াবহ।
প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে এই শিশু বিক্রি চক্রের সঙ্গে বিদেশ যোগ থাকতে পারে। এসি মেকানিকের কাজ করে বলে পরিচয় দিত। কিন্তু সিআইডি জানতে পেরেছে সে কয়েকদিনের ব্যবধানে কঙ্গো ও মলদ্বীপে গিয়েছিল। এখানেই প্রশ্ন কেন সে একাধিকবার বিদেশ ভ্রমণ করেছে? তবে সে নাকি তদন্তকারীদের কাছে দাবি করেছে যে এসি মেকানিকের কাজে সে বিদেশ গিয়েছিল। তবে অনুমান করা হচ্ছে এই গোটা চক্রের সঙ্গে বিদেশ যোগ থাকতে পারে। মূলত শিশু বিক্রি সংক্রান্ত ব্যাপারে কথা বলার জন্যই মানিক বিদেশে গিয়েছিল কি না সেটাই নিশ্চিত হতে চাইছে সিআইডি। প্রাথমিক তদন্তে সিআইডির গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে কলকাতা থেকে শিশুদের হায়দরাবাদ সহ অন্যান্য জায়গায় বিক্রি করা হয়ে থাকতে পারে। সবটাই খতিয়ে দেখছে সিআইডি।
কত টাকায় বিক্রি হত শিশু?
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, একজন শিশুকে দু থেকে পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করা হয়েছে। তবে মানিক আর তার স্ত্রী একমাত্র এই কারবার চালাত এমনটা নয়। একটা গোটা চক্র ছিল এর পেছনে। কলকাতার একাধিক ব্যক্তি এই চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।
কীভাবে এই চক্র কাজ করত?
মানিক বিভিন্ন আইভিএফ সেন্টার ও বেহালার একটি স্পার্ম ডোনেশন সেন্টারে যেত। সেখানে গিয়েই তার শিশু বিক্রির ব্যবসায়ে হাত পাকানো শুরু হয়। মূলত নিঃসন্তান দম্পতিদের শিশু নেওয়ার প্রতি যে আর্তি থাকে সেটাকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিল মানিক। এজন্য সমাজমাধ্যমে একটি পেজও খোলা হয়েছিল। সেখানেই নিঃসন্তান দম্পতিদের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করত সে। এরপর একটা সময় সরাসরি ফোন। তারপর শিশু কেনার অফার। আর একবার অর্ডার পাকা হয়ে গেলেই ডেলিভারি। তবে পরবর্তী সব ধাপটাই চলত গোপনে। মনে করা হচ্ছে পটনা, গয়া থেকে শিশু আনা হত। তবে কলকাতা থেকে শিশু যে একেবারে যায়নি এমনটা সম্ভবত নয়। সবটাই তদন্ত করে দেখছে সিআইডি।