আইনের ভাষায় কাকে অভিযুক্ত বলা হয়? কাকে দোষী বলা যায়? তা নিয়ে নবান্নের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সংঘাতে জড়ালেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সোমবার নবান্নের বৈঠকে জুনিয়র ডাক্তাররা স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের অপসারণের দাবি তোলেন। তাঁকে ‘অভিযুক্ত’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। সেইসময় মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন যে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হলে তাঁকে ‘অভিযুক্ত’ বলা যায় না। আইনে সেটা স্বীকৃত নয়। পালটা জুনিয়র ডাক্তারদের এক প্রতিনিধি দাবি করেন, কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তাঁকে 'অভিযুক্ত' বলা যায়। তাতে আইনি কোনও বাধা নেই। আইনের ভাষায় তখনই ‘দোষী’ বলা যায়, যখন কোনও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত নয়। যদিও নিজের যুক্তিতে অনড় থাকেন মুখ্যমন্ত্রী।
অভিযুক্ত ও দোষী নিয়ে সংঘাত
মুখ্যমন্ত্রী: আই অ্যাম সরি, আমি এতক্ষণ কথা বলিনি। এখনও বলব না। তোমাদের কথা আগে শুনব। কিন্তু একটা মানুষকে অভিযুক্ত প্রমাণ করার আগে তাকে অভিযুক্ত বলা যায় না। আমি তোমায় এটা লিগ্যাল পয়েন্ট থেকে বলছি। কাজেই তুমি তোমার কথা বলতে পারো। তুমি তোমার কমপ্লেন করতে পারো। কিন্তু আদৌও সে অভিযুক্ত কিনা, সেটার কোনও এভিডেন্স (প্রমাণ) পাওয়া যায়নি।
জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি: ম্যাডাম জাস্ট আমি একটা জিনিস বলতাম। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, সেই ব্যক্তিকে আমরা অভিযুক্ত বলব। যদি সেই অভিযোগ প্রমাণ হয়, তখন সেই ব্যক্তিকে আমরা বলব দোষী। সুতরাং যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তাঁকে অভিযুক্ত বলে উল্লেখ করাটা গ্রামাটিক্যালি এবং লিগ্যালি ভুল বলে আমাদের মনে হয় না।
মুখ্যমন্ত্রী: না অভিযুক্ত বলা যায় না।
আরও ১টি বিষয় নিয়ে সংঘাত
তবে শুধু সেই বিষয়টি নিয়ে নয়, থ্রেট কালচারে জড়িত থাকার অভিযোগে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে যাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে, তাঁদের সাসপেনশনের নির্দেশ নিয়েও উষ্মাপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি প্রশ্ন করেন, রাজ্য সরকারকে না জানিয়েই কীভাবে ৪৭ জনকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিলেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের প্রিন্সিপাল? সরকারকে জানানোর প্রয়োজন বোধ করেননি কেন তিনি?
ওঁরা ‘কুখ্যাত অপরাধী’, পালটা অনিকেতের
আর সেই প্রশ্নের জবাবে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের প্রিন্সিপাল কিছু বলার আগেই জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের অন্যতম ‘মুখ’ অনিকেত মাহাতো দাবি করেন, যাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে, তাঁরা ‘কুখ্যাত অপরাধী’। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হয়েছে। এখান থেকে তাঁদের সাসপেনশন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলে ভুল বার্তা যাবে। ধর্ষক এবং অপরাধীদের পক্ষে থাকার বার্তা যাবে বলে দাবি করেন অনিকেত।