কলকাতা সহ জেলায় জেলায় অ্যাডিনো ভাইরাসের থাবা। একের পর এক শিশুর মৃত্যু। উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে। তবে চিকিৎসকদের একাংশের মতে অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরেও বোঝা যাচ্ছে না। এনিয়ে অভিভাবকদের উদ্বেগও ক্রমশ বাড়ছে।
এদিকে অভিজ্ঞ মহলের মতে, বহু শিশুর বিশেষত নবজাতক ও একেবারে ছোট্ট শিশুদের প্রবল জ্বর আর ডায়ারিয়ার মতো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। তবে সবগুলিই যে অ্য়াডিনোভাইরাসের সঙ্গে সংযুক্ত তেমনটা নয়। কয়েকজনের আবার নাক থেকে রক্ত পড়া বা চোখ লাল হয়ে যাওয়ার ঘটনা হচ্ছে।
চিকিৎসকদের একাংশের মতে, অভিভাবকদের অনেকেই ভাবছেন হয়তো প্রচন্ড জ্বর আর শ্বাসকষ্টের সমস্যা হলেই সেটাই অ্যাডিনোভাইরাসের লক্ষণ।
এদিকে বিসি রায় হাসপাতালে এখন শুধুই কান্নার রোল। একের পর এক শিশুর মৃত্যু। অভিভাবকদের একাংশের দাবি, আইসিইউ বেড মিলছে না। চরম অব্য়বস্থা চলছে।
এক শিশু চিকিৎসক জানিয়েছেন, ডায়ারিয়া আর পাকস্থলীতে নানা সমস্যার ব্য়াপারটিও অ্যাডিনোভাইরাসের লক্ষণ। কিন্তু অনেকেই এটা বুঝতে পারছেন না। সেকারণে বাড়ির ছোট্ট শিশুর পেটের সমস্য়া হলেও সেটাকে গুরুত্ব না দিয়ে ফেলে রাখছেন অভিভাবকরা। এটা একেবারেই ঠিক হচ্ছে না। এরপর শিশুর শ্বাসকষ্ট শুরু হচ্ছে। তখন অবস্থা যখন গুরুতর হচ্ছে তখন তাকে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসছেন বাড়ির লোকজন। সেই শিশুকে ভেন্টিলেশনে রাখা একান্ত দরকার। এর সঙ্গেই শিশু চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন অ্য়াডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হলে খুব সাধারণ কিছু লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, শ্বাসকষ্টের প্রচন্ড সমস্যা ও প্রচন্ড জ্বর।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পাঁচ বছরের নীচে থাকা শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার প্রবনতা বেশি। তবে ৬ মাসের নীচে যে শিশুরা রয়েছে তাদের মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে। এই ভাইরাসের হানায় ইতিমধ্য়েই একের পর এক শিশুর মৃত্য়ু হয়েছে। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতন হওয়া অত্যন্ত দরকার।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আপনার শিশুর যদি শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দেয় তবে অবশ্য়ই তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। ফেলে রাখবেন না। যদি শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে তবে ফেলে না রেখে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হতে পারে।
শহরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমের শিশু বিশেষজ্ঞের মতে,সময় থাকতে রোগটা চিহ্নিত করা ও তার চিকিৎসা শুরু করাটা সবথেকে আগে প্রয়োজন। সাধারণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে এমন শিশু সপ্তাহ দুয়েকের মধ্য়ে সেরে যেতে পারে। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে অ্যান্টিভাইরাল ট্রিটমেন্ট প্রথমেই প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। যাদের লিভার, ফুসফুস, কিডনি আক্রান্ত হচ্ছে তাদের জন্যই অ্যান্টি ভাইরাল ওষুধ প্রয়োজন। অনেকের শ্বাস নেওয়ার সময় সোঁ সোঁ শব্দ হতে পারে। তখন সাবধান হতে হবে।