সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শেষযাত্রায় মিলেমিশে গিয়েছিল সব রাজনৈতিক রং। তারপরই ঢুকে পড়ল রাজনীতি। বুধবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী অভিযোগ করলেন, সৌমিত্রবাবুর মরদেহ নিয়ে বাংলায় ‘নাটক’ হল। অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সৌমিত্রবাবুকে বিভিন্ন পদ থেকে অপসারণ করেছিল।
আরও পড়ুন : ডিসেম্বরেই মুক্তি পাচ্ছে সৌমিত্রর ‘অবলম্বন’, ছবিতে লেখকের ভূমিকায় প্রয়াত অভিনেতা
বুধবার সকালে প্রয়াত শিল্পীর গল্ফগ্রিনের বাড়িতে যান অধীর। সেখানে সৌমিত্রবাবুর কন্যা পৌলমী বসুর সঙ্গে কথা বলেন। সৌমিত্রবাবুকে শ্রদ্বার্ঘ্য জানান। সেখান থেকে বেরিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রাজনীতির অভিযোগ তোলেন অধীর। অভিযোগ করেন, সৌমিত্রবাবুর মরদেহ নিয়ে রাজনীতি করা হয়েছে। অথচ সেই সরকারই বিভিন্ন পদ থেকে সৌমিত্রবাবুকে বিভিন্ন পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিল।
আরও পড়ুন : সৌমিত্রর শেষযাত্রায় রঙের বিভেদ ভুলে পা মেলালেন মমতা-বিমান, এ শহর আজ শুধু অপুর
অধীর বলেন, ‘সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর তাঁর মরদেহ নিয়ে অনেক নাটক হয়ে গেল, রাজনীতি হয়ে গেল। কিন্তু যেখানে যেখানে তাঁকে অধিকার দেওয়া হয়েছিল, যে সমস্ত পদে তাঁকে বসানো হয়েছিল, ২০১১ সালের পর তা একটা একটা করে তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হল। ২০২০ সাল পর্যন্ত অনেক ছোটোখাটো, মাঝারি, এ পাড়ার-সে পাড়ার শিল্পীদের সম্মান দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, যিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একজন অভিনেতা এবং শিল্পী, তাঁকে কিন্তু কখনও এই সরকার একটা ছোটোখাটো, মাঝারি সম্মান দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি। ২০১১ সালে ক্ষমতায় এল। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে সম্মানিত করার জন্য যে সমস্ত জায়গা ছিল, সবকিছু থেকে তাঁকে বঞ্চিত করে দেওয়া হল।’
আরও পড়ুন : উত্তম না সৌমিত্র বাঙালির সেরা রোম্যান্টিক হিরো কে? কিছু প্রশ্নের উত্তর অধরাই থাক
তবে বঙ্গে ক্ষমতায় আসার এক বছর পরেই সারাজীবনের অবদানের জন্য সৌমিত্রবাবুর হাতে চলচ্চিত্র পুরস্কার তুলে দেন তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। সাংস্কৃতিক তথা বিনোদন জগতের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর যে ঘনিষ্ঠ বলয় তৈরি হয়েছিল, সেই সীমানার ধারেকাছে দেখা না গেলেও ২০১৭ সালে সৌমিত্রবাবুকে রাজ্যের সর্বোচ্চ সম্মান বঙ্গবিভূষণ দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন : সৌমিত্রর হাতের লেখা পালটে দিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়, জানালেন সন্দীপ রায়
পাশাপাশি রাজ্য সরকারের কাছে অধীর আর্জি জানান, সৌমিত্রবাবুর স্মৃতি জীবন্ত রাখতে নিদেনপক্ষে একটি অডিটোরিয়াম তৈরি করা হোক। একইসঙ্গে সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে সৌমিত্রবাবুর নামে একটি চেয়ার সংরক্ষিত রাখার জন্য কেন্দ্রকে আর্জি জানাবেন বলেও দাবি করেন অধীর।