হাইকম্যান্ডের সিদ্ধান্ত নিয়ে তাঁর মনে কোনও বিরোধ নেই। রবিবার একথা জানালেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তথা সদ্য প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। প্রসঙ্গ, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে তাঁর উত্তরসূরি হিসাবে শুভঙ্কর সরকারের নিয়োগ।
দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তাঁর কোনও বক্তব্য রয়েছে কিনা, সেটাই জানতে চাওয়া হয়েছিল অধীর রঞ্জনের কাছে। জবাবে তিনি বলেন, 'আমি এই বিষয়ে কিছুই বলতে চাই না। যে কেউই সভাপতি হতে পারেন। নয়া প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি চয়নের ক্ষেত্রে দলীয় শীর্ষ নেতৃত্ব সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। যদি তাদের তরফে কাউকে সভাপতি নিযুক্ত করা হয়, তাহলে তা নিয়ে কেন ইস্যু করা হবে? আমার এ নিয়ে কোনও আপত্তি নেই।'
প্রসঙ্গত, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে অধীরের উত্তরসূরি শুভঙ্কর সরকার, এর আগে সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটি (এআইসিসি)-এর সম্পাদক হিসাবে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে দলের দায়িত্বে ছিলেন।
প্রসঙ্গত, এবছরের লোকসভা নির্বাচনে নিজের পোক্ত আসনেই (বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্র) পরাজিত হন পোড় খাওয়া রাজনীতিক তথা ওই আসনে টানা পাঁচবারের (১৯৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত) সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। এরপর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকেও ইস্তফা দেন তিনি।
যদিও দলের প্রতি অধীরের অবদান স্বীকার করে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করে বিবৃতি জারি করে এবং পরবর্তীতে তাঁর জায়গায় শুভঙ্কর সরকারকে পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসাবে ঘোষণা করেন।
নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পর কী বলেন শুভঙ্কর সরকার?
নতুন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রথমেই বলেন, তাঁর মতে সাংগঠনিকস্তরে বেশ কিছু রদবদলের প্রয়োজন আছে।
শুভঙ্করের কথায়, 'সভাপতি হিসাবে আমার প্রথম কাজই হল, একেবারে তৃণমূলস্তরের কর্মীদের পাশাপাশি নেতৃত্বে থাকা দলীয় সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলা। আমার উদ্দেশ্য, কংগ্রেসকে পুনরুজ্জীবিত, পুনর্গঠন এবং আরও শক্তিশালী করা। '
প্রসঙ্গত, কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস জাতীয়স্তরে ইন্ডিয়া জোটের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও অধীরের আমলে রাজ্য রাজনীতিতে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের কোনও বনিবনা হয়নি। বস্তুত, অধীরের তীব্র মমতাবিরোধী অবস্থান কারও অজানা নয়।
এই প্রেক্ষাপটে এবারের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস বিপুল জয় পেলেও অধীরের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সেভাবে দাগ কাটতে পারেনি। অধীর নিজে তাঁর গড়ে তৃণমূলের প্রথমবারের প্রার্থী ইউসুফ পাঠানের কাছে হেরেছেন।
এই ঘটনার পরই অধীরের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। পরবর্তীতে, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে অধীরের ইস্তফা এবং তাঁর ছেড়ে যাওয়া আসনে সদ্য শুভঙ্করের নিয়োগ একটি রাজনৈতিক বৃত্ত সম্পূর্ণ করল বলেই মনে করছে তথ্যাভিজ্ঞ মহল।
এখন দেখার নয়া সভাপতি পেয়ে প্রদেশ কংগ্রেস আবারও একবার বাংলার রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে পারে কিনা!