যাচ্ছে না মুখ্যমন্ত্রিত্ব। পাঁচ বছরের তিনিই থাকতে পারবেন তৃতীয় তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিধানসভায় আনুষ্ঠানিকভাবে তাতে সিলমোহর পড়ে গেল। বিধায়ক হিসেবে শপথগ্রহণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘ছোটো বোনকে’ শপথবাক্য পাঠ করালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
মমতার পাশাপাশি বৃহস্পতিবার বিধায়ক হিসেবে শপথ নিয়েছেন জাকির হোসেন ও আমিরুল ইসলাম। জাকির জঙ্গিপুর কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে জিতেছেন। সামশেরগঞ্জে তৃণমূলের জয়ধ্বজা উড়িয়েছেন আমিরুল। তিনজনের শপথগ্রহণের ফলে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় তৃণমূলের বিধায়ক সংখ্যা আবারও দাঁড়িয়েছে ২১৩। যে সংখ্যক আসন বিধানসভা ভোটে জিতেছিল ঘাসফুল শিবির (২৯২ টি আসনের মধ্যে)। দুই বিধায়ক (খড়দহ এবং গোসাবার বিধায়ক) মৃত্যু এবং শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের ইস্তফার কারণে তৃণমূলের বিধায়ক সংখ্যা ২১০-এ ঠেকেছিল। আপাতত পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা মোট ২৯০ জন নির্বাচিত বিধায়ক আছেন। চারটি আসন ফাঁকা আছে। যে চারটি কেন্দ্রে (দিনহাটা, শান্তিপুর, খড়দহ এবং গোসাবা) আগামী ৩০ অক্টোবর উপ-নির্বাচন হবে।
যদি মমতার সেই শপথগ্রহণ নিয়ে রীতিমতো টানাপোড়েন চলেছে। সূত্রের খবর, দিনকয়েক আগে রাজভবন থেকে বিধানসভায় একটি চিঠি আসে। তাতে জানানো হয়, নবনির্বাচিত বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাজ্যপাল। সংবিধানের ১৮৮ ধারা অনুযায়ী নিজের মনোনীত ব্যক্তি তথা বিধানসভার স্পিকার শপথবাক্য পাঠ করানোর যে অধিকার রাজ্যপাল দিয়েছিলেন, তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ এবার থেকে মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্য এবং বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাজ্যপাল। যে ক্ষমতা সংবিধান মোতাবেক তাঁর হাতে আছে।
যদিও সূত্রের খবর, রাজ্যপালের সেই ক্ষমতা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে একেবারে অসন্তুষ্ট ছিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ। ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁরা জানিয়ে দেন, রাজভবনে মমতাদের শপথগ্রহণ হলে তাঁরা যাবেন না। তারইমধ্যে বিধানসভার তরফে রাজভবনের কাছে পালটা চিঠি পাঠানো হয়। তাতে জানানো হয়, যে কোনও রাজনৈতিক দলের যে কোনও প্রতিনিধি বিধায়ক পদে জিতে শপথ নিতে আসতে পারেন। তাই এই প্রত্যাহার করা ক্ষমতা যেন স্পিকারকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। যদিও রাজ্যপাল সাফ জানিয়ে দেন, তিনিই শপথবাক্য পাঠ করাবেন। সেইমতো বৃহস্পতিবার তিনিই বিধানসভায় আসেন।