তারিখটা ছিল—৬ জুন, ২০২২। সন্ধ্যাবেলায় পুলিশের কাছে খবর আসে, হরিশ মুখার্জি রোডের একটি বাড়ির একতলায় খুন হয়েছে। সেই বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় অবাঙালি দম্পতি অশোক শাহ ও রশ্মিতা শাহের রক্তাক্ত মৃতদেহ। এই ঘটনার তিনদিনের মাথায় ওই পরিবারের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। পরে আরও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু এই ঘটনার মূলচক্রী গা–ঢাকা দেয়। তারপর আট মাস কেটে গেলেও পলাতক অভিযুক্ত দীপেশ শাহ এখনও অধরা।
ঠিক কী অবস্থা পুলিশের? কেউ অপরাধ করে কলকাতা পুলিশের নাগালের বাইরে থেকে যাবে সেটা খুব একটা আগে ঘটেনি। সেখানে ভবানীপুর কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত যে গভীর কৌশল নিয়েছে সেটা মানছেন খোদ গোয়েন্দারাই। আট মাস কেটে গেলেও নিয়মিত নজর রাখা হচ্ছে দীপেশের আত্মীয় এবং বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে। আসলে দীপেশের সম্পর্কে কোনও সূত্র জোগাড় করতেই এই পদক্ষেপ করেছেন তাঁরা। তবে এখনও তার টিকি ছোঁয়া যায়নি।
আর কী জানা যাচ্ছে? এদিকে দীপেশের প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন গোয়েন্দারা। ২০১২ সালে হঠাৎ স্ত্রী, মেয়ে–সহ সংসার ছেড়ে চলে গিয়েছিল দীপেশ। তারপর অনেক খোঁজাখুঁজি করে ২০১৪ সালে পরিবারের সদস্যরা লাক্ষ্মাদ্বীপ ঘুরতে গিয়ে সেখানে দীপেশের খোঁজ পায় এবং ধরা পড়ে দীপেশ। বাড়ি ছেড়ে সুদূর লাক্ষ্মাদ্বীপে ছদ্মবেশে টানা দু’বছর কাটিয়েছিল দীপেশ। তখন কোনও মোবাইল ফোন ব্যবহার করেনি দীপেশ। এমনকী ওই দু’বছর স্ত্রী এবং মেয়ের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখেনি ভবানীপুর জোড়া হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত।
তারপর ঠিক কী ঘটেছিল? ২০১৪ সালে ওই ঘটনার পর দীপেশের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এখনও পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে লুকিয়ে আছে ‘ধূর্ত’ মাস্টারমাইন্ড। খুনের পর এক বন্ধুর স্কুটারে চেপে হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত গিয়েছিল দীপেশ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দীপেশের ওই বন্ধুর সঙ্গেও কথা বলেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের দীপেশের বন্ধু জানান, স্কুটার থেকে নামার পর আমাকে চলে যেতে বলেছিল দীপেশ। পুলিশ সূত্রে খবর, হাওড়া স্টেশনের সামনে নামলেও প্ল্যাটফর্মের দিকে যায়নি দীপেশ। স্টেশনের প্রবেশপথ কিংবা প্ল্যাটফর্ম চত্বরের কোনও ক্যামেরাতেই ধরা পড়েনি দীপেশের ছবি। তাহলে কোথায় গেল দীপেশ? ধরতে তৎপর পুলিশ।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup