রাজ্য পুনর্বাসন দেওয়ার পরই কাটল গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রো রুটের জট। গত দু’বছর ধরে থমকে থাকা এই রুটের মেট্রো প্রকল্পের জট দখলদারদের পূনর্বাসন দেওয়ার পরই কেটে গেল। ৫ নম্বর সেক্টর ও মহিষবাথান এলাকার সেতুর নীচে বসবাসকারী জবরদখলকারীদের জন্য গত দু’বছর ধরে থমকে ছিল এই রুটের মেট্রো প্রকল্পের কাজ। অবশ্য রাজ্য সরকার জবরদখলকারীদের উচ্ছেদ না-করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করাতেই এই মেট্রো রুটের জট কেটেছে। দখলদারদের থাকার জন্য অন্যত্র বাড়ি ও ব্যবসার জন্য দোকান তৈরি করে দিয়েছে রাজ্য। ফলে, মেট্রো প্রকল্পে যে সব থেকে বড় বাধা ছিল, তা এখন কেটে গিয়েছে। বছরদুয়েক পর অবশেষে এই রুটে ফের কাজ শুরু হতে চলেছে।
জট কাটায় এবার দ্রুত এই রুটের মেট্রো প্রকল্পের কাজ শুরু করতে চাইছে আরভিএনএল কর্তৃপক্ষ। এবার দ্রুত এই রুটের মেট্রো প্রকল্পের অবশিষ্ট কাজ শুরু হবে বলেই জানিয়েছে রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড (আরভিএনএল)।
এ প্রসঙ্গে আরভিএনএলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (সিভিল এক্সপার্ট) সত্যরঞ্জন দাস বলেন, ‘ওই এলাকায় উড়ালপুলের পাশ দিয়ে মেট্রো প্রকল্পের ১১টি স্তম্ভ তৈরি করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এত বড় প্রকল্প দু’বছর স্তব্ধ হয়ে পড়া বিরাট ব্যাপার। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে রাজ্য সরকার ও প্রশাসন। তার ফলে সমস্যা মিটেছে।’
নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বিলম্বের সবচেয়ে বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল রাজ্য ও রেলের মধ্যে নীতিগত ফরাক। সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের নীতিতে রয়েছে জবরদখলকারীদের পুনর্বাসন না-দিয়ে উচ্ছেদ করা যাবে না। আবার রেলের নীতি হল যে, জবরদখলকারীদের ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসন দেওয়া হয় না। সে কারণেই রাজ্য এই ব্যয় ভার বহন করেছে। পরিবহণ দফতর এই জবরদখলকারীদের জন্য দোকান ও দু’কামরার ঘর তৈরি করতে অর্থ বরাদ্দ করেছে। আবার নগরোন্নয়ন দফতরের জমিতে সেই ঘর ও দোকান তৈরি করে দিয়েছে বিধাননগর পুরসভা। ইতিমধ্যেই লোকজন সেখানে থাকতে শুরু করেছেন। অগস্টেই তাঁরা ঘরের চাবি হাতে পেয়েছেন। দোকানও তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মহিষবাথান সংলগ্ন ৫ নম্বর সেক্টর ও নিউটাউনের মধ্যে সংযোগকারী সেতুর নীচে মোট ২৭টি পরিবারের বসবাস ছিল। এঁদের মধ্যে অনেকেই সেখানে ঘর তৈরি করে অন্যকে ভাড়া দিয়ে রেখেছিলেন। এমনকী, সেখানে একাধিক দোকানও ছিল। আরভিএনএলের সমীক্ষায় উঠে আসে অনেক জবরদখলকরিদের সেতুর নীচে ঘর থাকার সত্বেও সেই ঘরগুলোতে ভাড়ার ব্যবসা করছেন। সেই জটের কারণে ওই এলাকায় মেট্রো প্রকল্পের কাজ থমকে গিয়েছিল। অবশেষে রাজ্যের মধ্যস্ততায় তা মিটল।