মর্মান্তিক সেই দুর্ঘটনা ঘটেছিল গত ২১ মে। দুই মায়ের কোল খালি করে দুই সন্তান পাড়ি দিয়েছিল না ফেরার দেশে। ভয়ঙ্কর কালবৈশাখী প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল দুই রোয়িং শিক্ষার্থীর। নৌকা উল্টে রবীন্দ্র সরোবরের জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছিল দুই বন্ধুর। কেটে গিয়েছে পাঁচ মাস। এখন আবার রবীন্দ্র সরোবরে চালু হল রোয়িং। তবে রোয়ারদের নিরাপত্তায় এবার বাড়তি সতর্ক বিভিন্ন ক্লাব কর্তৃপক্ষ। ক্লাব চত্বরে লাগানো হয়েছে লাল এবং সবুজ আলো। আর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী এই আলো প্রতীকী চিহ্ন হিসেবে কাজ করবে। সূত্রের খবর, ঝড়–বৃষ্টি কিংবা বজ্রপাতের পূর্বাভাস থাকলে জ্বলে উঠবে লাল আলো। সেদিন রোয়ারদের জলে নামার অনুমতি দেবে না ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু সিত্রাং ঘূর্ণিঝড়ে কী পদক্ষেপ করা হবে? আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, রবিবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে ঝড়–বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ সিত্রাং ঘূর্ণিঝড় আসছে। এই বিষয়ে লেক ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক দেবু দত্ত বলেন, ‘ওইদিন খারাপ আবহাওয়ার পূর্বাভাসের জন্য ক্লাবে লাল আলো জ্বালিয়ে দেওয়া হবে। যাতে রোয়িং করা না যায়। দুর্যোগ কেটে গেলে লাল আলো নিভে ফের সবুজ হয়ে যাবে।’ শুক্রবার থেকে রোয়িং চালু হয়েছে রবীন্দ্র সরোবরে।
আর কী জানা যাচ্ছে? লেক ক্লাব সূত্রে খবর, দু’রকম জলের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। আদৌ রবীন্দ্র সরোবরে পেট্রল চালিত উদ্ধারকারী নৌকা চালানো যাবে কি না তার সিদ্ধান্ত নেবে প্রশাসন। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সেই রিপোর্ট ক্লাবগুলিতে আসার কথা। অনুমতি মিললে লেক ক্লাব, ক্যালকাটা রোয়িং ক্লাব এবং বেঙ্গল রোয়িং ক্লাব— প্রত্যেকে একটি করে পেট্রল চালিত নৌকা রাখবে। তিন ক্লাবের মিলিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এবার থেকে রোয়িং চলাকালীন রবীন্দ্র সরোবরের তিনটি আইল্যান্ডে ওই তিনটি উদ্ধারকারী নৌকা রাখা হবে। যাতে কোনও কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে দ্রুত পৌঁছে যাওয়া যায়।
ঠিক কী দেখা গিয়েছে? গতকাল, শুক্রবার লেক ক্লাবের ১০ জন সদস্য রোয়িং করেন। রোয়ারদের নিরাপত্তায় আপাতত ‘ম্যানুয়েল রেস্কিউ বোট’ রাখা হচ্ছে। রোয়িং চলাকালীন ক্লাব প্রাঙ্গণে থাকছে অ্যাম্বুলেন্স। প্রত্যেক নৌকায় রাখা হচ্ছে একটি বোর্ড। তাতে লেখা থাকছে অ্যাম্বুলেন্সের নম্বর, প্রশিক্ষকের নাম–নম্বর এবং সংশ্লিষ্ট ক্লাবের নম্বর। এখানে একটা দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। তাই সেফটি প্রোটোকল মেনে ফের পাঁচ মাস পরে রোয়িং চালু হল।