কেউ বিমানসেবিকা, কেউ আবার নার্স। করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে যখন গৃহবন্দি গোটা দেশ, তখন ময়দানে নেমে নিজেদের কর্তব্যে অবিচল এই নারীরা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভয়ানক চাপের মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে তাঁদের। সঙ্গে বিমানসেবিকাদের রয়েছে চাকরি হারানো বা বেতন কমার শঙ্কা। এত বাধা টপকেও রোজ হাসি মুখে পরিষেবা পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁরা। এমন অকুতভয় নারীদের পাশে দাঁড়ানো তো দূর অস্ত, তাদের করোনা-আক্রান্ত ঘোষণা করে ঘরছাড়া করতে মরিয়া সমাজেরই একাংশ। এমনই খবর এসেছে কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলা থেকে।
কলকাতার একাধিক বিমানসংস্থার বিমানসেবিকাদের অভিযোগ, তাঁদের এলাকাছাড়া করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পাড়ারই কিছু মাতব্বর। এমনকী কোনও কোনও বিমানসেবিকাকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে ঘোষণা করে দিচ্ছেন স্থানীয়রাই। এর পর বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে তাদের ওপর চাপ দেওয়া হচ্ছে। এমনই অভিযোগ করছেন তাঁরা।
অভিযোগ, বাড়িতে থাকাকালীন তো বটেই। না থাকলেও থামছে না হুমকি। পরিজনদের পড়তে হচ্ছে হয়রানির মুখে। কোথাও কোথায় বাড়ি বয়ে এসে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে পাড়ার দাদা বা আবাসনের মাতব্বর। এখানেই শেষ নয়, কার্যত একঘরে করে রাখা হয়েছে বহু বিমানসেবিকার পরিবারকে। এমনকী স্থানীয় দোকানে গেলে বিক্রেতা জিনিস বিক্রি করছেন না তাঁদের। সোমবার সোশ্যাল সাইটে ভাইরাল হয়েছে এমনই একটি ভিডিয়ো। যা দেখে কলকাতা পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়েন। যিনি নিজেও আইসোলেশনে রয়েছেন।
এতো গেল বিমানকর্মীদের দুর্দশার কথা। রাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে নার্সরাও একই রকম অভিযোগ করেছেন। রবিবার জনতা কার্ফু শুরু হওয়ার পর বহরমপুরে বহু শিক্ষানবিশ নার্সকে ঘর খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বাড়ির মালিকরা। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে নার্সিংয়ের ওই পড়ুয়ারা এই নির্দেশে দিশেহারা। কোথায় যাবেন তাঁরা? জবাব নেই কারও কাছে।