কলকাতা থেকে কি সরাসরি ইউরোপের বিমান চালু করা হবে? তা নিয়ে তিনটি সংস্থাকে অনুরোধ করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, কলকাতা থেকে যাতে ইউরোপ পর্যন্ত সরাসরি উড়ান পরিষেবা চালু করা হয়, সেজন্য টাটার মালিকাধীন এয়ার ইন্ডিয়া, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ এবং জার্মানির লুফথানসাকে অনুরোধ করেছেন। এমনকী টাটা গ্রুপের থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়াও মিলেছে বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন যে পশ্চিমবঙ্গে ‘অনেক কিছু’ করতে চান বলে আশ্বাস দিয়েছেন টাটা সনসের চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরন।
‘বাংলার জন্য অনেক কিছু করতে চাই’
যদিও বুধবার বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের (বিজিবিএস) মঞ্চে টাটা সনসের চেয়ারম্যান ছিলেন না। কেন তিনি ছিলেন না, সেটার কারণ ব্যাখ্যা করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টাটা সনসের চেয়ারম্যান সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি জানান যে একটা সমস্যা পড়ে যাওয়ায় নিজে আসতে পারছেন না। তবে টাটা গ্রুপের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের পাঠাচ্ছেন। মমতার কথায়, ‘(উনি বলেন যে) আমি বাংলার জন্য অনেক কিছু করতে চাই। পরে দুু'পক্ষের মধ্যে আলোচনা করে সময় নির্ধারণ করে আমি আসব।’
কলকাতা-ইউরোপের সরাসরি বিমান চালু করবে এয়ার ইন্ডিয়া, আশায় মমতা
সেইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, কলকাতা থেকে ইউরোপের মধ্যে যাতে সরাসরি এয়ার ইন্ডিয়াার বিমান চালানো যায়, সেই বিষয়টি টাটা সনসের চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করেছেন। আপাতত কলকাতা থেকে ইউরোপের কোনও সরসারি বিমান নেই (দোহা বা অন্যত্র হয়ে ঘুরে যেতে হয়)। সেই অনুরোধের প্রেক্ষিতে নেতিবাচক কিছু বলেননি টাটা সনসের চেয়ারম্যান। বরং তিনি যা বলেছেন, তাতে সেই বিমান চালু হয়ে যাবে বলে আশা করছেন মমতা।
আগে কলকাতা থেকে ইউরোপের সরাসরি বিমান চলত!
একটা সময় অবশ্য কলকাতা থেকে ইউরোপের সরাসরি উড়ান ছিল। জার্মানির ফ্রাঙ্কফুট থেকে কলকাতার মধ্যে বিমান চালাত লুফথানসা। কিন্তু ২০১২ সালে সেই পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছিল জার্মান উড়ান সংস্থা। লুফথানসার আগেই কলকাতা থেকে ইউরোপের সরাসরি উড়ান বন্ধ করে দিয়েছিল ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ এবং এয়ার ইন্ডিয়া। ২০০৯ সালের মার্চ থেকে কলকাতা-লন্ডন উড়ান বন্ধ করে দিয়েছিল ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ। আর ২০০৮ সালের অক্টোবরেই কলকাতা-লন্ডন বিমান বন্ধ করে দিয়েছিল এয়ার ইন্ডিয়া।
আর সেই পরিষেবা বন্ধের কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট মহলের তরফে 'অলাভজনক' যুক্তি দেখানো হয়েছিল। সেইসময় পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তি জানিয়েছিলেন যে কলকাতা-ইউরোপের সরাসরি বিমানের বিজনেস ক্লাসে যাত্রীর অভাব হত। বেঙ্গালুরু, দিল্লি, মুম্বইয়ের শহরের নিরিখে কলকাতা থেকে আন্তর্জাতিক রুটে চলা বিমানের বিজনেস ক্লাসের যাত্রীর সংখ্যা প্রায় অর্ধেক থাকত। যা পরিষেবা বন্ধের অন্যতম কারণ ছিল বলে সেইসময় জানানো হয়েছিল।