কারামন্ত্রী অখিল গিরিকে বরখাস্তের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিল তৃণমূল কংগ্রেস। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূলের ১৩ বছরের জমানায় এত বড় কঠোর সিদ্ধান্ত এর আগে কখনও নেয়নি ঘাসফুল শিবির। সূত্রের খবর, তাঁকে রেঞ্জার মণীষা সাউয়ের কাছে নিঃশর্তে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও অখিল রয়েছেন অখিলেই। তারপরই তৃণমূল কার্যত নজিরবিহীনভাবে সিদ্ধান্ত নেয় অখিল গিরিকে মন্ত্রিত্বের পদ থেকে সরানো হবে।
সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় এই ভিডিয়ো দেখার পরে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এরপরই সুব্রত বক্সি ফোন করেন অখিল গিরিকে। তাঁকে বনদফতরের মহিলা রেঞ্জারকে নিঃশর্তে ক্ষমা চাওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরেও অখিল গিরির একেবারে ডোন্ট কেয়ার মনোভাব। এমনকী এরপরেও সংবাদমাধ্য়মের সামনে অখিল গিরি বলেন, হয়তো মিনিস্টার হিসাবে আমার এই কথা বলা ঠিক হয়নি। তবে ওই রেঞ্জারের জন্যই যত ঘটনা হল।
এরপরই তৃণমূল কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নেয়, অখিল গিরির কাছ থেকে প্রথম পদত্যাগপত্র চাওয়া হবে। এরপর তিনি যদি সেই পদত্যাগপত্র দিতে অস্বীকার করেন তবে তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকেই বরখাস্ত করা হবে। একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে এমনটাই জানা গিয়েছে।
এদিকে বিরোধীরা বার বারই দাবি করেছিলেন গ্রেফতার করতে হবে অখিল গিরিকে। তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরাতে হবে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় কি সেই সাহস দেখাতে পারবেন?
তবে এবার অখিলের বিরুদ্ধে কঠোরতম সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে তৃণমূল। সব দিক ঠিকঠাক থাকলে মন্ত্রিসভা থেকে সরে যেতে হবে অখিল গিরিকে।
এদিকে অখিলের বিরুদ্ধে মুখ্য়মন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। সব মিলিয়ে অখিলকে ঘিরে অস্বস্তি বাড়তে থাকে তৃণমূলের অন্দরে। শেষ পর্যন্ত অখিলকে ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্ত।
কী বলেছিলেন অখিল গিরি?
মন্ত্রী অখিল গিরি কাঁথির রেঞ্জ অফিসারকে বলেছিলেন, আপনার আয়ু বেশিদিন নেই। সবাইকে নিয়ে চলুন। বেশিদিন থাকতে পারবেন না আর সাত-আটদিন দশদিন। বিট অফিসার, টফিসার সব জানি। কত বড় দুর্নীতি হয় সব জানি। ভেতরে কী আছে সব জানি। সব ফাঁস করে দেব বিধানসভায়।
এরপর ওই অফিসার বলেছিলেন, আপনার সঙ্গেও পার্সোনালি কোনও ব্যাপার নয়। ওদের সঙ্গেও নয়।
মন্ত্রী হকারদের দিকে দেখিয়ে বলেছিলেন, ওরা সারা রাত এখানে থাকে। আপনি থাকেন না। ঝড় মাথায় নিয়ে ওরা থাকেন। কারোর কথা শুনতে চাইছেন না। এরপর আঙুল উঁচিয়ে মন্ত্রী বলেন, বেশি কথা বলবেন না। আপনি ফিরে যেতে পারবেন না। সরকারি কর্মচারী, মাথা নীচু করে কথা বলবেন। কত বড় জানোয়ার, বেয়াদপ! কথা বললে হবে না। ডাং নিয়ে পেটাব তখন বুঝবেন! তোপ মন্ত্রীর।