একদিকে রাজ্য সরকারের আর্থিক দুরবস্থা নিয়ে রোজই কাঁদুনি গাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে অবসরপ্রাপ্ত আমলার হয়ে মামলা লড়ার জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করছে তার সরকার। এমনই অভিযোগ উঠল মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ের সরকারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কেন্দ্রের মামলায় আলাপনের হয়ে আইনজীবীর খরচ মেটাচ্ছে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর। কী করে একজন অবসরপ্রাপ্ত আমলাকে করদাতার টাকায় আইনি সাহায্য দেওয়া যেতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
বর্তমানে রাজ্য প্রশাসনিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কর্ণধার আলাপনবাবু। সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মুখ্য পরামর্শদাতা তিনি। ২০২১ সালে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পরে রাজ্যের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তখন কলাইকুন্ডা বিমানবন্দরে প্রোটোকল মেনে বৈঠকে হাজির থাকেননি তৎকালীন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেই দিঘার উদ্দেশে উড়ে যান তারা। এর পরই আলাপনের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের প্রক্রিয়া শুরু করে কেন্দ্র। এর মধ্যে আলাপনের অবসরের দিন চলে আসে। মুখ্যসচিব হিসাবে নিজের কার্যকাল সম্প্রসারণের বদলে অবসর গ্রহণ করেন তিনি।
বোনাস না মেলায় বিক্ষোভ দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার শ্রমিক ইউনিয়নের
কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের কলকাতা বেঞ্চে মামলা করেন তিনি। এর পর সেই মামলা দিল্লিতে সরিয়ে নিয়ে যায় কেন্দ্র। এর পর কলকাতায় ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ চালুর দাবিতে মামলা করেন আলাপন। সেই মামলায় আলাপনের হয়ে সওয়াল করলেন কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভি। স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রে খবর, প্রতিটি শুনানিতে মনু সিংভিকে ২৫ লক্ষ টাকা করে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। এখনো পর্যন্ত আলাপনের মামলায় মনু সিংভিকে ১.৫ কোটি টাকা মিটিয়েছে রাজ্য।
অবসরপ্রাপ্ত আমাদের একাংশের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জন্যই আলাপনকে বাঁচাতে করদাতাদের টাকা খরচ করা হচ্ছে। আলাপনের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগের মামলায় রাজ্য আইনি সাহায্য দিলে আপত্তি নেই। কিন্তু কলকাতায় ট্র্যাব্যুনালের বেঞ্চ খোলার দাবিতে আলাপনের পাশে দাঁড়ানো অর্থের অপচয়।
প্রাক্তন আমলাদের আরেকটি অংশের অবশ্য দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক ছাড়েন আলাপন। ফলে এই সংক্রান্ত যাবতীয় মামলায় তার পাশে থাকা উচিত রাজ্য সরকারের।