আর হাতে সময় কয়েক ঘণ্টা। তারপরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি পাড়ি দেবেন কিনা। ইতিমধ্যেই আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলির নির্দেশ প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে রাজ্য–রাজনীতি এই ইস্যুতে উত্তাল হলেও মুখ্যসচিব যাচ্ছেন না দিল্লি বলে সূত্রের খবর। বরং ওই দিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে থাকবেন তিনি। এখানে একটা বিষয় রয়েছে। সেটা হল, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় যদি দিল্লি যান তাহলে তাঁর সেইদিনই অবসর। কারণ ৩১ মে তাঁর অবসরগ্রহণের দিন। সরকারি নিয়মেই। আর যে তিন মাস মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছিল সেটা ছিল মুখ্যসচিব হিসাবে। দিল্লি গেলে আগের নির্দেশিকা খারিজ হয়ে যায়। আর না গেলে আরও তিন মাস মুখ্যসচিব থাকা যায়। বাংলার স্বার্থে যেটা জরুরি।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর ঘূর্ণিঝড় বৈঠকে থাকেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে কেন্দ্রের অভিযোগ। তা নিয়ে বিতর্কের ঝড় অবশ্যই জাতীয় রাজনীতির ইস্যু হয়ে ওঠে। আর সেদিন রাতেই আসে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলির নির্দেশ। শনিবার দুপুরে দেখা গেল ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। তাহলে অবসরের দিনই কি আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে বদলি? এই প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুরোধ করলেন, চিঠি প্রত্যাহার করা হোক। এমনকী মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, ‘কোন আইনে তাঁকে ডেকে পাঠানো হল? স্বাধীনতার পর ৭৪ বছরে দেশে কখনও এমন ঘটনা ঘটেনি!’
এদিকে আলাপনকে ছাড়তে চান না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন। প্রতিহিংসা শেষ করে চিঠি প্রত্যাহার করুন। ঘূর্ণিঝড় ও কোভিড নিয়ে কাজ করতে দিন মুখ্যসচিবকে। পাশাপাশি কেন্দ্রের হাতে ক্ষমতা আছে আধিকারিককে তলব করার। কিন্তু সংশ্লিষ্ট আমলার ইচ্ছারও গুরুত্ব আছে। ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাঁকে দিল্লি আনা সহজ নয়। রাজ্য আমলাকে ছাড়তে চাইছে কিনা, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ।
অন্যদিকে এই ইস্যুকেই সামনে রেখে এগিয়ে যেতে চাইছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাই সমস্ত প্রধান সচিবদের নিয়ে সোমবার বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বৈঠকে থাকবেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। সুতরাং তাঁর দিল্লি যাওয়া হচ্ছে না বলেই নবান্ন সূত্রে খবর। আবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর আর্জি মেনে কেন্দ্রীয় সরকার ওই বদলির নির্দেশ প্রত্যাহার করে কি না সেটাই দেখার।