তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে পশুদের সুস্থতা সুনিশ্চিত করতে একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে আলিপুর জুলজিক্যাল পার্ক। তীব্র গরমে পশুদের কষ্ট প্রশমিত করতে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তার একটা ধারণা দিয়েছে চিড়িয়াকানা দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক শুভঙ্কর সেনগুপ্ত।
সরাসরি গরমের প্রভাব ঠেকাতে পশুদের খাঁচাগুলি সবুজ চাদর দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। পাখাসহ সরীসৃপের আশ্রয়কেন্দ্রে স্প্রিংকলার স্থাপন করা হয়েছে। বাঘ ও সিংহের মতো বিভিন্ন প্রাণীর নাইট শেল্টারে ফ্যান ও কুলারও স্থাপন করা হয়েছে। হাতিদের এনক্লোজারে কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থা করা হয়েছে, গরম থেকে বাঁচাতে যাতে তারা সেখানে যেতে পারে।
শুভঙ্কর সেনগুপ্ত বলেন, ‘প্রথমত, সমস্ত এনক্লোজারগুলিতে, আমরা সর্বাধিক পরিমাণে জলের ব্যবস্থা করেছি। কারণ এটি প্রাণীদের উত্তাপ থেকে রক্ষা করার একমাত্র উপায়। তারা হয় জলে স্নান করবে বা পান করবে। তাই আমরা উভয়ের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করেছি।’
আরও পড়ুন। ভোটকেন্দ্রে গজরাজ ঢুকে পড়ার আশঙ্কায় নিরাপত্তার তোড়জোড় শুরু, তটস্থ বন দফতর
তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে আমরা নিয়মিত তাদের পানীয় জলে ওআরএস মেশাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘শীতল পরিবেশের প্রয়োজন এমন প্রাণীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
শুভঙ্করবাবু বলেন, ‘কিছু এনক্লোজারে কালো ভাল্লুক, স্লথ বিয়ার এবং ক্যাঙ্গারুর মতো প্রাণী, যাদের শীতল অবস্থার প্রয়োজন হয়, আমরা এয়ার কুলার ইনস্টল করেছি।’
তিনি জানান ছোট প্রাণীদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘পাখি এবং লেমুরের মতো ছোট প্রাণীদেরও জলের প্রয়োজন হয়, তবে তারা জলে যায় না, তাই আমরা তাদের এনক্লোজারগুলিতে স্প্রিংকলার সিস্টেম লাগিয়েছি। তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার ওপর নির্ভর করে দিনে দুই থেকে তিনবার এই স্প্রিংকলার চালু করা হয়, যাতে তারা আরামে স্নান করতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘হাতি ঘেরের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হয়েছে, যেখানে উপর থেকে জল স্প্রে করার জন্য একটি ঝরনা ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়েছে, বিদ্যমান পরিখাগুলিকে পরিপূরক হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে যেখানে হাতিরা স্নান করতে পারে।’
চলতি তাপপ্রবাহের সময় চিড়িয়াখানার বাসিন্দাদের স্বাচ্ছন্দ্য ও স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য এই পদক্ষেপগুলি একটি বিস্তৃত প্রচেষ্টার অংশ বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন। 'ভেড়ি 'পলিসি' তো আসবে, পুলিশ-প্রশাসনের চোখ খোলা থাকবে তো?' প্রশ্ন সন্দেশখালির
শুভঙ্কর আরও বলেন, ‘তাপমাত্রার পরিবর্তনের উপর নির্ভর করে চিড়িয়াখানার প্রাণীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘শীতের সময় তাদের জন্য কম্বল এবং হিটার সরবরাহ করা হয়। তাই এটা নির্ভর করে ঋতুর ওপর। সারা বছর পানীয় জলের জন্য বিশেষ যত্ন নেওয়া হয়। নিরাপদ খাবার জল সবার জন্য প্রয়োজন, তাই সারা বছরই জল বিশুদ্ধ করা হয়।’