রোগীর তাণ্ডবে উত্তপ্ত হয়ে উঠল পিজি। আচমকা এক রোগী বেড থেকে উঠে গিয়ে নার্স এবং অন্যান্য রোগীদের উপর হামলা চালায়। এমনকী রোগী পরিবারের উপরে হামলা চালায়। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। অভিযুক্ত রোগীর নাম সুজয় ঘোষ। তিনি সোদপুরের বাসিন্দা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওয়ার্ডের অন্যান্য রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: আরজি করের ছায়া এসএসকেএম হাসপাতালে, সিটি স্ক্যান রুমে ফলস সিলিং ভেঙে পড়ল
জানা গিয়েছে, সুজন ঘোষ একটি বেসরকারি টেলিকম সংস্থার ফিল্ড ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত। তাকে চার দিন আগে পিজির গ্যস্ট্রো এন্টেরোলোজি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছিল। শনিবার তাকে স্থানান্তরিত করা হয় অ্যানেক্স ওয়ার্ডের পিজি পলিক্লিনিকে। রবিবার তার ছুটি হওয়ার কথা ছিল। তবে অভিযোগ ছুটি পাওয়ার আগেই আচমকা তাণ্ডব শুরু করেন ওই রোগী। তিনি বাড়ি যাওয়ার জন্য ছটফট করতে থাকেন। তবে নার্সরা জানিয়ে দেন এই সময় ছুটি দেওয়া হয় না। কিন্তু, রোগী বাড়ি যাওয়ার জন্য জেদ ধরে বসে থাকেন। তখন এক নার্স ধমক দিলেই মেজাজ হারান সুজয়।এরপরেই তাণ্ডব শুরু করেন।
তার তাণ্ডবে কার্যত শোরগোল পড়ে যায় ওয়ার্ডে। তখন খবর পেয়ে নার্সরা রোগীকে বেঁধে রাখেন। কিন্তু, ওই রোগী বাঁধন খুলে নার্সকে স্যালাইন স্ট্যান্ড দিয়ে মারধর করতে শুরু করেন। তখন অন্যান্য রোগীরা আটকাতে গেলে তাদেরকেউ ওই রোগী মারধর করেন বলে অভিযোগ। এমনকী এক রোগীকে মেঝেতে ফেলে কিল, ঘুষি, লাথি মরতে থাকেন। তখন শেষ পর্যন্ত ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে রোগীকে বাগে আনা হয়। এই ঘটনায় মৌমিতা রায় নামে এক নার্স পিঠে আঘাত পেয়েছেন।
রোগীর এক আত্মীয় জানান, খবর পেয়ে তারা হাসপাতালে আসেন। রোগীর নাক এবং মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। তবে কেন রোগীর এরকম আচরণ তা বুঝে উঠতে পারছেন না তারা। এই অবস্থায় আপাতত রোগীকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। তাদের বক্তব্য, ডাক্তারেরা চিকিৎসা করছেন। সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত রোগীদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার ভরসা তারা পাচ্ছেন না।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রোগীকে ওইদিন ছাড়া হয়নি। হাসপাতালের মূল ভবনে রোগীকে স্থানান্তর করে মনোরোগের চিকিৎসা শুরু করা হয়। যদিও ঘটনায় রোগীর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। এদিকে, এই ঘটনার পরেই সরব হয়েছেন নার্সরা। তাদের বক্তব্য, শুধু চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করলে হবে না নার্সদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে হবে। এদিনের ঘটনায় অন্যান্য সহকর্মীরা না থাকলে সে ক্ষেত্রে ওই নার্সের আরও বড় ক্ষতি হতে পারত।