সামনেই মানিকতলা উপনির্বাচন। সেই উপনির্বাচনের অন্যতম দায়িত্বে রয়েছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। আর প্রার্থীদের উপস্থিতিতে দলের কর্মী সম্মেলনে এবার একেবারে কার্যত তোলাবাজির প্রসঙ্গ তুলে দলের একাংশকে সতর্ক করে দিলেন কুণাল। বৈঠকে তৃণমূলের প্রার্থী সুপ্তি পান্ডেও উপস্থিত ছিলেন। সেই পরিস্থিতিতে কুণাল কিছুটা অস্বস্তিকর প্রসঙ্গ উত্থাপন করে কার্যত এলাকার সাধারণ মানুষের মন জয় করার চেষ্টাই করেছেন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
এদিনের ওই ঘরোয়া বৈঠকে কুণাল বলেন, দু একটা ছোটখাটো অভিযোগ রয়েছে। ওটা ভোলাদা দেখে নেবে। ( অমল চক্রবর্তী, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর) । সেই সঙ্গেই কুণাল জানিয়ে দেন, ক্যানাল ইস্ট রোড, যেখানে ঠাকুর গড়া হয়, সেখান থেকে একটা অভিযোগ আসছে। আমাদের সঙ্গে থাকা দু একজন তাদের কাছে কোনও আবদার, টাবদার করছে। কোনও অবস্থায় কারও মনে যেন এতটুকু ক্ষোভ না থাকে যে কেউ এই উপনির্বাচনে ভোট দিতে গেলেন না বা রাগে ভোটটা অন্য জায়গায় দিয়ে দিলেন। এরপরই তিনি স্থানীয় কাউন্সিলরকে বলেন, ব্যাপারটি তিনি যে দেখে নেন।
সেই সঙ্গেই কুণাল কিছুটা কড়াভাবেই বলেন, যারা এই অন্যায় আবদার করছে আমি জানি তাদের কাছে খবর চলে যাবে। হয় তারা সিধে হবে না হয় তাদের আইনি ব্যবস্থার মধ্য়ে পড়তে হবে। সোজা কথা বলে দিলাম।
এদিকে অনেকের মতে, তৃণমূল তোলা তোলে এটা নতুন কোনও অভিযোগ নয়। কিন্তু একেবারে কুমোরপাড়ায় ঠাকুরের রেট অনুসারে এই অন্যায় আবদার করা হয় এটা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কেন আচমকা তৃণমূল এই তোলাবাজির বিরুদ্ধে সরব হচ্ছে?
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, লোকসভা ভোটের ফলাফলে কলকাতা শহরের একাধিক ওয়ার্ডে দেখা গিয়েছে তৃণমূল বিরাট বিপদে পড়েছে। বহু ওয়ার্ডে দেখা গিয়েছে এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি। সেক্ষেত্রে সেই ফলাফলের পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সেটা দেখছে তৃণমূল। কিন্তু কুণালের কথায় কি অন্যায় আবদার আদৌ কমবে? সেই সঙ্গেই প্রশ্ন উঠছে এই তোলাবাজির কথা দলের অনেকেই জানেন। তারপরেও কেন এতদিন চুপ ছিলেন? তবে কি সামনে ভোট বলেই এনিয়ে সতর্ক হয়ে পা ফেলা শুরু করল তৃণমূল?
সব মিলিয়ে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে কলকাতা শহরে চাপে আছে তৃণমূল। সেকারণেই কি এবার বাসিন্দাদের মন ভরাতে সবরকম উদ্যোগ নিচ্ছে তারা?