বাংলার বকেয়া নিয়ে বারবার সরব হতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এমনকী রেড রোডে দু’দিনের অনশন আন্দোলন করতেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তবু বাংলার বকেয়া টাকা দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার বলে অভিযোগ। তারপর বীরভূমে সভা করতে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৩৫টি লোকসভা আসনের কথা বলেন। আর সেটা পেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ২০২৫ সালে পড়ে যাবে বলে তিনি হুঙ্কার ছাড়েন। যার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে তাঁর পদত্যাগ দাবি করেন। এবার পাল্টা কেন্দ্রীয় বাহিনীর বকেয়া টাকা চেয়ে রাজ্যের উপর চাপ বাড়াল অমিত শাহের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এই নিয়ে নবান্নে একটি চিঠিও পাঠানো হয়েছে। যা নিয়ে এখন প্রশাসনে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে বলে সূত্রের খবর।
ঠিক কী লেখা আছে চিঠিতে? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে যে চিঠি নবান্নে এসেছে তাতে বকেয়া মেটানোর কথা লেখা রয়েছে। সেখানে লেখা আছে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর টাকা বকেয়া আছে। আর সেই বকেয়া টাকার উপর জরিমানা ধার্য হয়েছে। সুতরাং এখন এই বেয়া টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮৫২ কোটি টাকা। আর সেটা মেটানোর কথা জানানো হয়েছে ওই চিঠিতে। যদিও এই বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র–রাজ্য কোনও পক্ষই মন্তব্য করতে চাননি। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে দফতরের অন্দরে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? এদিকে নানা কারণে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়ে থাকে। কেন্দ্রীয় বাহিনী বাবদ নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ রাজ্যের কাছে দাবি করে থাকে কেন্দ্র। এবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে রাজ্য প্রশাসনের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এই খাতে রাজ্যের কাছে বকেয়া রয়েছে প্রায় ১৮০৬ কোটি টাকা। আর একই বছরে ১ অক্টোবর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আরও বকেয়া হয়েছে প্রায় ২১ কোটি টাকা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নিয়ম অনুযায়ী, এই বকেয়া ৯০ দিনের মধ্যে মিটিয়ে না দিলে ২.৫% হারে জরিমানা করা হয়। তাতে প্রায় ৪৪ কোটি টাকা বাড়তি চেপেছে। ফলে বকেয়া টাকার অঙ্ক ১৮৫২ কোটি টাকাতে পৌঁছে গিয়েছে। যা নিয়ে চাপ দেওয়া শুরু হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
কেন এমন পাল্টা চাপ? সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তারপর বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। সেখানে রাজ্যের পক্ষ থেকে এই বকেয়া মেটানো না হলে সেটা প্রচারে নিয়ে আসা হবে। রাজ্য সরকার যতবার কেন্দ্রের বকেয়া নিয়ে সরব হবে ততবার পাল্টা এই বকেয়ার কথা তুলে ধরবে কেন্দ্র। যদিও এই বকেয়া রাজ্যের প্রাপ্য বকেয়ার থেকে অনেক কম। রাজ্য নিজে থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী চায় না। নির্বাচনের সময় জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সুপারিশে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে আসে। সেটা রাজ্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া যুক্তিযুক্ত নয়। সেখানে এমন চাপ দেওয়া বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।