অমিত শাহের সভা শুরু আগে যুব তৃণমূলের পক্ষ বঞ্চনার অভিযোগ জানিয়ে পঞ্চাশ হাজার খোলা চিঠি দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে প্রধানমন্ত্রী পৌঁছে দেওয়ার জন্য পাল্টা বঞ্চনার অভিযোগপত্র সংগ্রহ করেছে বিজেপি। সভামঞ্চের থেকে কিছুটা দূরে সেই বঞ্চনাপত্র সংগ্রহের জন্য রাখা হয়েছে টিনের বাক্স। যার নাম দেওয়া ‘বঞ্চনার ভাণ্ডার’। সেই বাক্সে জমা পড়ছে বাংলায় ছাপানো বঞ্চনার অভিযোগপত্র।
প্রধানমন্ত্রী উদ্দেশ্য করে লেখা সেই চিঠিতে লেখা রয়েছে, ‘গত দশ বছর ধরে আপনার নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গের জন্য বহু প্রকল্প এবং তার সুবিধার ব্যবস্থা করেছে। ভারতবর্ষের অন্যান্য রাজ্যে কোনও রকম রাজনৈতিক রং না দেখে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা বিতরণ করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে লক্ষ লক্ষ মানুষ এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আমিও তাঁদের একজন। আমি সব রকমের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা /১০০ দিনের কাজ/বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ / বার্ধক্য ভাতা/ বিধবা ভাতা/ বেকার ভাতা/ পরিবার সহায়তা ভাতা/ মেরিট কাম মিন স্কলারশিপ (সংখ্যালঘু ভাতা)/ মৎস্যজীবী ভাতা/ তফসিলি জাতি পেনশন/ জনজাতি পেনশন/ পিএম কিষাণ নিধি/ আয়ুষ্মান ভারত বিমা/ শ্রম কার্ড/ স্বনিধি প্রকল্প বা হকার লোন/ মুদ্রা লোন থেকে বঞ্চিত হয়েছি।’ নিজের বঞ্চনার ক্ষেত্র, নাম, ঠিকানা, বুথ ও মোবাইল নম্বর লিখে সেই চিঠি জমা করতে হচ্ছে।
শাসকদলের অভিযোগ, বিভিন্ন প্রকল্প প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা বাকি রয়েছে। সেই টাকা দাবি করে দিল্লিতেও একাধিকবার দরবার করেছে তৃণমূল। কয়েকলক্ষ বঞ্চিতদের চিঠি নিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রামোনন্নমন্ত্রকে যায় তৃণমূল।
বিজেপি অভিযোগ, দুর্নীতি এবং প্রকল্পের নাম ও রঙ বদল করার জন্য টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র।
এই টানাপোড়নে যাঁরা প্রকৃত প্রাপক, তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন। যার প্রভাব পড়তে পারে লোকসভা ভোটে। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, সে কারণেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে চিঠির রাজনীতি।
শাহের সভায় এই বঞ্চনার ভাণ্ডারের দায়িত্বে থাকা এক বিজেপি কর্মী জানালেন, সভা এলাকায় ২০টি টিনের বাক্স রাখা হয়েছে। যেখানে ছাপানো চিঠিতে নিয়ে নিজে কোন প্রকল্পে পাওনা থেকে বঞ্চিত তা লিখে, স্বাক্ষর করে সেই চিঠি বাক্সে ফেলতে হচ্ছে। বঞ্চনার ভাণ্ডারে দায়িত্বে থাকা কর্মীরাই সাহায্য করেছেন শূন্যস্থান ভরে চিঠিগুলিকে বাক্সে ফেলতে।
ওই বিজেপি কর্মী জানালেন ১ লক্ষ চিঠি ছাপা হয়েছে। যে চিঠি জমা পড়বে তা পৌঁছে দেওয়া হবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে।