একুশের নির্বাচনের প্রাক্কালে দেখা গিয়েছিল কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা নিয়ে শহর থেকে গ্রাম বুক ফুলি্য়ে চষে বেড়াচ্ছেন বিজেপি নেতারা। আবার তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দিলেই মিলছিল কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা। নির্বাচনে জিততে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। কিন্তু ভোট মিটতেই এখন বিজেপি নেতারা নিষ্প্রভ হয়ে পড়েছেন। কারণ ব্যাপক ভরাডুবি পদ্মশিবিরের। এই পরিস্থিতিতে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও অনেকে তা রেখে দিতে চাইছেন। আবার অনেক বিধায়কের কাছে এই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বোঝার মতো। এই অবস্থায় দলের অন্দরে অনেক প্রশ্ন উঠেছে।
বিজেপি সূত্রে খবর, বিধানসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পরও অনেকে এখনও কেন্দ্রীয় জওয়ানদের রেখে দিতে চাইছেন। রাজ্য বিজেপির এক গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা অনেকের কাছেই স্ট্যাটাস সিম্বল। আবার অনেকে বন্দুকধারী জওয়ান পাওয়া যাবে কিনা নিশ্চিত হওয়ার পরেই দলে এসেছিলেন। এখন যেখানে কর্মীরা আক্রান্ত সেখানে তাঁরা যাচ্ছেনও না। হামলার ভয়ে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বহাল রাখতে চাইছেন। আসলে প্রাণ রক্ষার চেয়েও মান রক্ষা বেশি জরুরি।’
সূত্রের খবর, গত ৭ মে নব্য বিজেপি নেতাদের একটা অংশের নিরাপত্তা তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ১৫ মে পর্যন্তই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাওয়া যাবে। কেউ কেউ ১৬ মে থেকে নিরাপত্তা ছেড়ে দিতে রাজিও ছিলেন। তবে বড় অংশই মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেন। তাই মেয়াদ বাড়িয়ে ৩০ মে করা হয়।
কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাওয়া অনেকেই এই বিষয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না। তবে ভবানীপুর আসনে প্রার্থী হওয়া অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ বলেন, ‘আমি আগে চাইনি। আমার উপরে কয়েকবার হামলা হওয়ায় কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি আমায় বলা হয়েছে, যদি বহাল রাখতে চাই আবেদন করতে হবে। আমি কিছু জানাইনি।’
জানা গিয়েছে, দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, রাহুল সিনহা–সহ যে সব নেতারা অনেক আগে থেকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পান তাঁদেরটা বহাল থাকছে। আর এবার বিধায়ক হয়েছেন তাঁদের অধিকাংশকেই সেই সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এখন শুভেন্দু অধিকারী–সহ ৬৭ জন বিজেপি বিধায়ক কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাচ্ছেন। আর পরাজিত প্রার্থীদের জন্য নিযুক্ত জওয়ান অমিত শাহের দফতর তুলে নিতে চাইছে। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ছেড়ে দিয়েছেন চুঁচুড়া বিধানসভা আসনে পরাজিত হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। আবার যাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে যেতে চাইছেন তাঁরাও নিরাপত্তা ছেড়ে দেবেন বলে খবর।