বারবার নানা পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবু তিনি নিজের অবস্থান থেকে একচুলও সরেননি। প্রমাণ করেছেন তিনি সংগঠন গড়ে তুলতে জানেন। তবু দলের রাজ্য সভাপতি পদ থেকে সরে যেতে হয়েছে। ছেড়ে দিতে হয়েছে দলের সর্বভারতীয় সহ–সভাপতির পদও। তারপরও হতাশ না হয়ে নিজের কাজ করে চলেছেন। হ্যাঁ, তিনি বিজেপির খড়গপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ। এবার তাঁকে একান্ত বৈঠকের জন্য নয়াদিল্লি ডেকে পাঠালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। যা নিয়ে জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে। শুভেন্দু–সুকান্তদের এড়িয়ে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে পৃথক বৈঠক কেন? কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেন এমন করলেন? বঙ্গ–বিজেপির অন্দরেই উঠছে প্রশ্ন।
এদিকে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন এবং একুশ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি নিজের কৃতিত্ব দেখিয়ে ছিলেন। এখনও পর্যন্ত বঙ্গ বিজেপির সবচেয়ে সফল সভাপতি দিলীপ ঘোষই। বিজেপিকে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল করে তোলার কারিগর তিনিই। সেখানে তাঁকেই বারবার সরে যেতে হয়েছে পদ থেকে। আর যত তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তত বঙ্গ–বিজেপি অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। যদিও এখন তিনি শুধুই একজন সাংসদ। তাঁকে ক্যাবিনেট মন্ত্রী করার গুঞ্জন শুরু হলেও এখনও তাঁর ভাগ্যে সেই শিঁকে ছেঁড়েনি। ফলে মনের ভিতরে একটা ক্ষোভ তো রয়েছেই।
অন্যদিকে কিছু ক্ষোভ তিনি প্রকাশ্যে বলেও ফেলতেন। এই ক্ষোভের কথা কানে পৌঁছে গিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। তাই তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছেন অমিত শাহ বলে সূত্রের খবর। আগে কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতির মতো একটি পদ ছিল বটে। সম্প্রতি সেটাও গিয়েছে। মেদিনীপুরের সাংসদ যে অভিমানী সেটা তাঁর সাম্প্রতিক বক্তব্যে প্রমাণ মিলেছে। তিনি প্রকাশ্যে বলেছেন, রাজ্য নেতৃত্ব কেমন করে চলবে সেটা দেখার দায়িত্ব তাঁর নয়। তাই সম্ভবত অভিমান মেটাতেই দিলীপ ঘোষকে ডেকেছেন অমিত শাহ। কারণ বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। সেখানে দিলীপ হাল ছেড়ে দিলে বাংলায় ভরাডুবি নিশ্চিত বলে তিনিও মনে করেন। তাই কি হঠাৎ দিলীপকে জরুরি তলব? গুঞ্জন শুরু হয়েছে বঙ্গ–বিজেপির অন্দরে।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বর মাসেই হাওড়া ময়দান–এসপ্ল্যানেডের মধ্যে ছুটবে মেট্রো? রইল নয়া তথ্য
আর কী জানা যাচ্ছে? গত বুধবার রাতে অমিত শাহের দফতর থেকে টেলিফোন আসে দিলীপে ঘোষের কাছে। মেদিনীপুরের সাংসদ নিজেই সেকথা জানিয়েছেন। এমনিতেই সংসদের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার কথা ছিল দিলীপ ঘোষের। সেখানে অমিত শাহের টেলিফোন আসায় দুটি কাজ একবারে করা সম্ভব হবে নয়াদিল্লিতে। অমিত শাহের সঙ্গে দেখাও করবেন তিনি। এই বিষয়ে বিজেপির সাংসদ দিলীপ ঘোষ সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে টেলিফোন করেছিল। নয়াদিল্লি যাচ্ছি। বৈঠক হবে।’ এর বেশি কিছু বলতে চাননি তিনি।