রাজ্যজুড়ে বাড়ছে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার প্রকোপ। এরই মধ্যে এবার ডেঙ্গি প্রাণ কাড়ল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পড়ুয়ার। জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রের নাম ওহিদুর রহমান। তিনি এমটেকের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া ছিলেন। গত কয়েকদিন ধরেই ডেঙ্গি আক্রান্ত ছিলেন ওই পড়ুয়া। সোমবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। জানা গিয়েছে ওই ছাত্র এনএস ওয়ান ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ছিলেন। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে ওই ছাত্রকে কেপিসি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু, সেখানে অবস্থার অবনতি হলে গত ৩ সেপ্টেম্বর তাঁকে বেলভিউ নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই সোমবার তাঁর মৃত্যু হয়। ছাত্রের ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গি উল্লেখ রয়েছে। ঘটনার পরে যাদবপুরের অন্যান্য পড়ুয়াদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং কলকাতা পুরসভা একে অপরের উপর দায় চাপিয়েছে।
আরও পড়ুন: বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গির নমুনা সংগ্রহ করছে রাজ্যের অনেক পুরসভা, ব্যতিক্রম KMC
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানকার হস্টেলে থাকা বেশ কয়েকজন পড়ুয়া ইতিমধ্যেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, ক্যাম্পাস জুড়ে প্রচুর মশার উপদ্রব। এমনকী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ মশার উপদ্রবের কথা স্বীকার করেছিলেন। এর জন্য পালটা পুরসভাকেই দায়ী করেছেন তিনি। উপাচার্যের অভিযোগ, যাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস পরিষ্কার করার কথা তারা ঠিক মতো কাজ করছে না। যদিও মেয়র জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একাধিক জায়গায় নোংরা, আবর্জনা পড়ে থাকে। সেগুলি পরিষ্কার করার কোনও ব্যবস্থা করা হয় না। পুরসভায় সেগুলি পরিষ্কার করে থাকে। এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে সচেতনও করা হয়েছে। তারপরেও লাভ হয়নি বলে পালটা অভিযোগ তোলেন মেয়র। এ বিষয়ে আবারও সচেতন করা হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র।
প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্য দফতর সুত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ১৬০০ জন। তার মধ্যে কসবা, বেহালা, যাদবপুর, নিউ আলিপুর, তপসিয়া, তিলজলা, টালিগঞ্জ, গড়িয়া, বাঁশদ্রোণী, কসবা, মুকুন্দপুর এবং খিদিরপুর এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। যার সংখ্যাটা হল প্রায় ১০৮৮ জন। দুর্গাপুজোর পর শহরে আরও ডেঙ্গি বাড়তে পারে আশঙ্কা করছে পূর্ত দফতর। তার জন্য পূর্ত দফতরের তরফে পুরসভাকে সংক্রমণের হাড় কমাতে বিশেষ নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশে উল্লেখ করা হয়েছে, কেউ ডেঙ্গি আক্রান্ত হলে তাঁর বাড়ির ৫০ মিটারের মধ্যে অন্যান্য বাড়িতে কেউ জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে কিনা তার খোঁজ করে নিতে হবে এবং সেই ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করাতে হবে। পাশাপাশি মশা নাশক স্প্রে করতে হবে। কলকাতার পাশাপাশি উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি জেলাতেও মশাবাহিত রোগের প্রকোপ দেখা দিচ্ছে।