কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী রজত কুমার দে–কে খুনের ঘটনায় তাঁর স্ত্রী অনিন্দিতা পাল দে–কে (৩৫) সোমবার দোষী সাব্যস্ত করল বারাসত আদালত। খুন ও তথ্যপ্রমাণ লোপাটের ধারায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। বুধবার এই মামলার সাজা ঘোষণা করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
২০১৮ সালের ২৫ নভেম্বর রাতে নিউ টাউনের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় ওই আইনজীবীর দেহ। গলায় মোবাইল চার্জারের তার পেচিয়ে ৩৪ বছর বয়সী ওই আইনজীবীর শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুন করা হয়। বেডরুমের মেঝে থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁর মুখের রঙ নীল হয়ে ছিল বলে পুলিশ সে সময় জানায়। তাঁর গলায় কালো দাগও ছিল। যদিও তাঁর স্ত্রী অনিন্দিতা পুলিশকে জানিয়েছিল যে, খাট থেকে পড়ে গিয়ে হার্ট অ্যাটাকের পর তিনি মারা গিয়েছেন।
রাজ্য জুড়ে সাড়া ফেলে দেয় এই ঘটনা। নিউ টাউনে একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন ওই দম্পতি। তাঁদের একমাত্র ছেলের এখন বয়স সাড়ে ৩ বছর। সোমবার আদালতে দাঁড়িয়ে মৃত আইনজীবীর বাবা সমীর দে বলেন, ‘আমি চাই অনিন্দিতার সর্বোচ্চা সাজা হোক।’ সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘এই রায় আসলে সত্যের জয়। এটা আবার বোঝা গেল যে প্রমাণই শেষ কথা বলে।’
এই পর্যন্ত জামিনে থাকা অভিযুক্ত অনিন্দিতা রায় শুনে এদিন কান্নায় ভেঙে পড়েন। ঘটনার ৬ দিনের মাথায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। সেই ক’দিন নানারকমের মন্তব্য করে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করে রাখে অনিন্দিতা। বিধাননগরের তৎকালীন ডিসি (ডিডি) আভারু রবীন্দ্রনাথ জানিয়েছেন, জেরার মুখে ভেঙে পড়ে অবশেষে অপরাধের কথা স্বীকার করে সে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা যায় যে শ্বাসরোধ করেই খুন করা হয়েছে ওই আইনজীবীকে। এর পরই অনিন্দিতাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশের অনুমান, বিবাহ–বহির্ভূত সম্পর্কের টানাপোড়েনেই এই ঘটনা। অনিন্দিতা কাউকে নিয়মিত ফোন করত। আর সেটা নিয়ে প্রায়শই ঝামেল হত ওই দম্পতির মধ্যে। অভিযোগ, মৃত্যুর দিন রাতে অনিন্দিতা তার ঘরে একা থাকতে চেয়েছিল এবং এই নিয়েই তাঁদের মধ্যে অশান্তি হয়। যা শেষ হয় আইনজীবীকে খুন করে।