শিবঠাকুর মণ্ডলের দায়ের করা মামলায় অতিতৎপর পুলিশের অনুব্রতকে গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন তুলল আদালত। মঙ্গলবার অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের আবেদনের শুনানির সময় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে বিষয়টি তোলেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা অস্বচ্ছ ও লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছে আদালত।
এদিন বিচারপতি বাগচীর এজলাসে বিষয়টি উঠলে তিনি বলেন, ‘খুনের চেষ্টার ১ বছর পর অভিযোগ করতে হল কেন? আর অভিযোগ পেয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান না করেই কেন অনুব্রতকে গ্রেফতারের দরকার হল? অভিযোগকারীর কোনও শারীরিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে কি?’
পুলিশকে কটাক্ষ করে বিচারপতি বাগচী বলেন, ‘আপনাদের আধিকারিকরা তো খুবই দক্ষ দেখছি। অভিযোগ পেয়ে ছুটতে ছুটতে ঘটনাস্থলে গেলেন, প্রাথমিক অনুসন্ধান করলেন। আর হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানালেন। কিন্তু তারা বোধ হয় মেডিক্যাল রিপোর্টটা দেখতে ভুলে গেছিলেন। মেডিক্যাল রিপোর্টে কোনও আঘাতের চিহ্ন আছে কি? এটা তো গুলি ছোড়ার ঘটনা নয়, যে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগকারীর দেহে তার কোনও প্রমাণ থাকবে না? পুলিশকে ব্যবহার করে এভাবে একজনকে গ্রেফতার করা যায় না।’
বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, ‘পুলিশের কার্যপদ্ধতি অত্যন্ত অস্বচ্ছ। যা হয়েছে তা অত্যন্ত লজ্জাজনক। এভাবে একজনের গ্রেফতারির ফলে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’
বলে রাখি, গত ১০ ডিসেম্বর অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে জেরা করার অনুমতি দেয় রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। পরদিন সকালে যখন অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় করছেন ইডির আধিকারিকরা তখন আসানসোল জেলে অনুব্রতকে গ্রেফতার করতে পৌঁছে যায় দুবরাজপুর থানার পুলিশ। জানা যায় ১০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় শিবঠাকুর মণ্ডল নামে এক তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান অনুব্রতর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করেছেন। এর পর অনুব্রতকে গ্রেফতার করে দুবরাজপুর থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। তাকে পেশ করা হয় আদালতে। সেখানে ৭ দিনের জন্য অনুব্রতকে হেফাজতে পায় পুলিশ। যার জেরে ভেস্তে যায় অনুব্রতর দিল্লি যাত্রা।