বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তবে এই গ্রেফতারের আগে এবং পরে কেঁদেছেন তাবড় নেতা বলে সূত্রের খবর। মঙ্গলবার রাত থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন কেষ্ট মণ্ডল। তাঁর ঘনিষ্ঠদের সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে বোলপুরে নিজের ঘরে বসে কাঁদেন দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডল। এখন প্রশ্ন উঠছে, তাহলে তিনি কী গ্রেফতার হবেন বুঝতে পেরেছিলেন? আগাম খবর ছিল তাঁর কাছে?
কখন কাঁদলেন অনুব্রত মণ্ডল? সিবিআই সূত্রে খবর, রাতের অন্ধকারে যখন গাড়িতে করে অনুব্রত মণ্ডলকে নিজাম প্যালেসে নিয়ে আসা হচ্ছিল তখন অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট আর স্নায়ুর চাপ ধরে রাখতে পারলেন না। সিবিআইয়ের কনভয়েই বসে কান্নায় ভেঙে পড়লেন তিনি। মুখ মুছলেন তোয়ালে দিয়ে। আগের দিন রাতে বাড়িতে বসে কাঁদার কথা জানেন না সিবিআই অফিসাররা। তবে নিজাম প্যালেসে ঢুকে রাতে বিশ্রাম করার সময় কেঁদে ভাসান অনুব্রত।
তারপর ঠিক কী ঘটল? সিবিআই সূত্রের খবর, কনভয় পানাগড় পার করার পরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন অনুব্রত। বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে এসে আসানসোলে নিয়ে যাওয়া। আদালতে তোলা এবং সেখান থেকে নিজাম প্যালেসের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার সময় তিনি বুঝতে পারেন এবার তাঁর খেলা শেষ। আর তা অনুভব করেই কেঁদে ফেলেন এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা। এই পরিস্থিতিতে সিবিআই অফিসাররা তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, আপনার কী কোনও অসুবিধা হচ্ছে? আবার চোখে জল আসে তাঁর।
কেন কাঁদলেন অনুব্রত মণ্ডল? গরুপাচার মামলায় ১০ বার অনুব্রত মণ্ডলকে তলব করেছিল সিবিআই। কিন্তু মাত্র একবার হাজিরা দেন তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সভাপতি। অসুস্থতার কথা বলে হাজিরা এড়িয়ে যান অনুব্রত। শারীরিক সমস্যা দেখিয়ে ১৪ দিনের জন্য ফের সময় চেয়ে নেন। গতকাল বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা। মেয়ে সুকন্যাকে ফোন করতে চেয়েছিলেন অনুব্রত। কিন্তু তাঁকে সেই অনুমতি দেওয়া হয়নি। তখন সিবিআই আধিকরিকদের থেকে জানতে পারেন, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সমীর চক্রবর্তীরা সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দিয়েছেন, পার্টি অনুব্রতর পাশে নেই। তাঁকে একাই লড়তে হবে। অনুব্রত একা হয়ে যাওয়ার কথা ভেবেই কেঁদে ফেলেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।