কয়েকদিন আগেই রাজ্য বিধানসভায় পাশ হয়েছে অপরাজিতা বিল। ধর্ষণ বিরোধী কঠোর পদক্ষেপ করতেই এই বিল পাশ করানো হয়েছিল। বিরোধী বিজেপিও এতে সমর্থন করেছে। তবে এই বিল নিয়ে এবার বিস্ফোরক রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তাঁর অভিযোগ, অন্ধপ্রদেশ,মহারাষ্ট্র এবং অরুণাচলের মতো কয়েকটি রাজ্যে চালু থাকা বিলের থেকে টুকে বাংলার অপরাজিতা বিল তৈরি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, বিধানসভায় পাশ হওয়ার পর ধর্ষণ-বিরোধী বিল নিয়ম মেনে রাজভবনে পাঠানো হয়েছে। তবে দাবি করা হচ্ছে, বিলের সঙ্গে যে টেকনিক্যাল রিপোর্টের প্রয়োজন পড়ে, তা রাজভবনে পাঠানো হয়নি। এই আবহে বিলে রাজ্যপাল সম্মতি দিতে পারেন না।
পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী রাজভবনের অভিযোগ, যে কোনও বিল রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়ার পরে তা রাজ্যপালকে যখন পাঠানো হয়, তখন তার সঙ্গে টেকনিক্যাল রিপোর্ট পাঠাতে হয়। তবে কোনও ক্ষেত্রেই নাকি রাজ্যের তরফ থেকে বিলের সঙ্গে টেকনিক্যাল রিপোর্ট পাঠানো হয় না। এই আবহে রাজভবনের বক্তব্য, ‘টেকনিক্যাল রিপোর্ট’ না পাঠিয়ে রাজ্য সরকার পরে বিল পাশ না হওয়ার জন্য রাজভবনের উপর দোষারোপ করে। এদিকে এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিল তৈরির ক্ষেত্রে কোনও হোমওয়ার্ক না করে শুধু অন্য রাজ্যের বিল থেকে 'টুকলি' করা হয়েছে বলে অভিযোগ। যা নিয়ে রাজ্যপাল অসন্তুষ্ট। এদিকে ব্যতিক্রমী ভাবে এই বিল দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দরবারেও পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। এরই মাঝে এই বিল নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা।
এদিকে এর আগে এই অপরাজিতা বিলের বিরোধিতায় সরব হয়েছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। বিলটিকে 'পপুলিস্ট ধাপ্পাবাজি' বলে আখ্যা দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ জুনিয়র ডাক্তার ফ্রন্ট। এই অপরাজিতা বিল নিয়ে আরজি করের নিহত চিকিৎসকের মা বলেছিলেন, 'আজ ডাক্তারি যাঁরা পড়ছেন, তাঁরা কী ছেলে, কী মেয়ে...বিচার করা উচিত নয়। মেয়েরা ১২ ঘণ্টা ডিউটি করবে...ছেলেরা ২৪ ঘণ্টা ডিউটি করবে... এটা তো মেয়েদের আরও ছোট করা হচ্ছে। বৈষম্য। মেয়েদের আরও হেনস্থা করা হচ্ছে এটা। এটা কেন হবে? এই বিলকে সমর্থন করব না।' এদিকে বিধানসভায় এই বিলকে সমর্থন করা শুভেন্দুও এটিকে 'আইওয়াশ' বলে কটাক্ষ করেছেন। অবশ্য বিলটি পেশের আগে তিনি বলেছিলেন, 'আমরা রেজাল্ট দেখতে চাই। বিলকে দ্রুত আইনে পরিণত করা হোক।'