সেনার পরিশ্রমী জীবন তাদের পছন্দ ছিল না। তারা চেয়েছিলেন অল্প পরিশ্রমে বেশি অর্থ উপার্জন করতে। সেই লক্ষ্যে জম্মু-কাশ্মীরের সেনা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে কলকাতায় এসে বেআইনি চিটফান্ডের ব্যবসা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে তাদের সেই উদ্দেশ্য সফল হল না। বিমানবন্দর থেকে চার সেনা জওয়ানকে আটক করল বাহিনী। তাদের নাম হল- প্রবীণ রাজ, বি রাজেশ, সহিবুল শেখ এবং অজয় ঠাকুর।
আরও পড়ুন: প্রয়াগ চিটফান্ড মামলায় গ্রেফতার বাবা-পুত্র, ২ ডিরেক্টরের থেকে কী জানতে চায় ED?
জানা যাচ্ছে, প্রথমে অজয় এবং সহিবুল কাশ্মীরের সেনা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে আসেন। কারণ তারা সেনার পরিশ্রমী চাকরিতে ক্রমশ বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন। তারা চাইছিলেন কম পরিশ্রমে বেশি অর্থ উপার্জন করতে। সেই উদ্দেশ্যে তারা চিটফান্ড খোলার পরিকল্পনা করেছিলেন। গত এপ্রিল মাসে তারা সেখান থেকে পালিয়ে যান। তাতে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় ক্যাম্পে। শুরু হয় তাদের খোঁজখবর। তবে তারা পালিয়ে আসার পরেও বেশ কয়েকজন সেনা কর্মী এবং অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। তাদের চিটফান্ডের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রলোভন দেখান দুই জওয়ানকে। সম্প্রতি তারা দুবাইয়ে চিটফান্ডের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। গোয়েন্দারা সেই তথ্য জানতে পারেন। ঘটনায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশকে সতর্ক করেন গোয়েন্দারা। সেই তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার দুবাই থেকে কলকাতায় বিমানে করে নামার পরেই তাদের আটক করে পুলিশ।
জানা যাচ্ছে, অজয় এবং সহিবুলের প্রলোভনে পা দিয়ে রাজেশও সেনাবাহিনী থেকে পালিয়ে এসেছিলেন। তবে প্রবীণ সেনাবাহিনীতে কর্মরত। বিষয়টি জানতে পেরে নজরদারি শুরু করে দেন সেনা গোয়েন্দারা। সূত্রের খবর সোমবার সকালে তিনি দমদম বিমানবন্দরের নামেন। এরপর অজয়দের সঙ্গে দেখা করেন। আটক করার পর তাদের সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
আরও জানা গিয়েছে, বছরখানেক আগে সহিবুল এবং অজয় একটি চিটফান্ডে লগ্নি করেছিলেন। এরপর তারা সেনাবাহিনীর মধ্যে এজেন্ট হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন। গত এপ্রিল মাসে তারা পালিয়ে এসেছিলেন নিউটাউনে। সেখানে ৪৫ হাজার টাকার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, চিটফান্ড সূত্রে এর আগে তারাও দুবাই, মালয়েশিয়া সহ বিভিন্ন দেশে গিয়েছেন। আর বিলাসবহুল জীবনযাপন দেখিয়ে অন্য সেনা জওয়ানদের প্রলোভিত করার চেষ্টা করেছেন। তবে গোটা বিষয়টি জানতে পেরে নজরদারি শুরু হতেই শেষ পর্যন্ত তাদের আটক করে পুলিশ। আরও কেউ এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে কিনা? কত টাকা প্রতারণা করা হয়েছে? সে সমস্ত তথ্য জানার চেষ্টা করছেন সেনা আধিকারিকরা।